সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা শনিবার , ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
বাংলার অসাম্প্রদায়িকতার যাত্রায় বঙ্গবন্ধু | চ্যানেল খুলনা

বাংলার অসাম্প্রদায়িকতার যাত্রায় বঙ্গবন্ধু

স্বাধীনতার পর প্রথমেই একটি শাসনতন্ত্র প্রণয়নে হাত দেন বঙ্গবন্ধু। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে তিনি পুরনো কাঠামো ভেঙে নতুন একটি ব্যবস্থার দিকে যেতে চাইলেন। বঙ্গবন্ধু চেয়েছেন, বাংলাদেশ হবে এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে সব মানবাধিকার নিশ্চিত করা হবে। এজন্য হাজার বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বহু ধর্ম-বর্ণের এই জাতিকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে সম্প্রীতির বন্ধনে বাঁধলেন তিনি। রাষ্ট্রের অন্যতম একটি মূল নীতি হিসেবে ঘোষণা করলেন ধর্মনিরপেক্ষতাকে। ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাখ্যাও তিনি সেসময় দিয়েছেন। এটি নিয়ে ভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো অবকাশ নেই।

১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদের ভাষণে এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, হিন্দুরা তাদের ধর্ম পালন করবে, বৌদ্ধরা তাদের ধর্ম পালন করবে, খ্রিস্টানরা তাদের ধর্ম পালন করবে। কেউ বাধা দিতে পারবে না। আমাদের আপত্তি শুধু এই যে, ধর্মকে কেউ রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না। পঁচিশ বছর আমরা দেখেছি- ধর্মের নামে জুয়াচুরি, ধর্মের নামে শোষণ, ধর্মের নামে বেঈমানি, ধর্মের নামে অত্যাচার, এই বাংলাদেশের মাটিতে এসব চলেছে। ধর্ম অতি পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার মাধ্যমে সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মীয় অধিকার রক্ষার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বঙ্গবন্ধু নিজে তরুণ বয়সে কিন্তু একসময় শেরে বাংলা, সোহরাওয়ার্দীদের সঙ্গে পাকিস্তান চেয়েছেন। এমনকি পাকিস্তান চেয়ে যারা আন্দোলন করেছেন, তাদের মধ্য বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু ধর্মকে পাকিস্তানিরা যেভাবে ব্যবহার করেছে, তা বুঝতে পেরে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। এবং সেই তখন থেকেই অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের জন্য কাজ শুরু করেন। এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘পাকিস্তান সৃষ্টির পর আমি মনে করেছিলাম, পাকিস্তান হয়ে গেছে, সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের দরকার নাই। একটা অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হবে, যার একটা সুষ্ঠু মেনিফেস্টো থাকবে।’

কিন্তু পাকিস্তানিরা যখন উর্দুকে ইসলামি ভাষা বলে চাপিয়ে দিতে চাইলো আমাদের ওপর, ১৯৪৮ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এই ঘোষণা দিলেন, তখন নিজে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এর প্রতিবাদ করেন তরুণ শেখ মুজিব। পরবর্তীতে জেলে থাকা অবস্থায় ভাষা আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি এ বিষয়ে লিখেছেন, ‘দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা বিভিন্ন ভাষায় কথা বলে। আরব দেশের লোকেরা আরবি বলে। পারস্যের লোকেরা ফার্সি বলে। তুরস্কের লোকেরা তুর্কি বলে। ইন্দোনেশিয়ার লোকেরা ইন্দোনেশিয়ান ভাষায় কথা বলে। মালয়েশিয়ার লোকেরা মালয় ভাষায় কথা বলে। চীনের মুসলমানরা চীনা ভাষায় কথা বলে। শুধু পূর্ব পাকিস্তানের ধর্মভীরু মুসলমানদের ইসলামের কথা বলে ধোঁকা দেওয়া যাবে বলে ভেবেছিল, কিন্তু পারে নাই।’

পাকিস্তান পর্বে যেসব বিষয়কে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটে তার মধ্যে অন্যতম হলো: বৈষম্য ও শোষণমুক্তি, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠান জন্য সংগ্রাম এবং অসাম্প্রদায়িকতা। যে কারণে, ১৯৫৪ এর নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয় হয় এবং ১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ ‘আওয়ামী লীগ’-এ রূপান্তরিত হয়। এর মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অসাম্প্রদায়িক মানসিকতার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন এই দলটি। ষাটের দশকে এই অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবোধ আরো তীব্র হয়ে ওঠে ছয় দফার মধ্য দিয়ে। এর মূল দাবি ছিল মূলত সাংবিধানিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বশাসনের। কিন্তু এর ভাবাদর্শগত ভিত্তি ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদ, যার শেকড় অসাম্প্রদায়িকতার মধ্যে প্রোথিত। তৎকালীন সময়ে ‘পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’, ‘জাগো জাগো, বাঙালি জাগো’, ‘জয় বাংলা’… এসব শুধু স্লোগান ছিল না। এসব মন্ত্রের মাধ্যমে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালির মানসলোকে অসাম্প্রদায়িকতার বন্ধন রচিত হয়েছে।

লেখক:: সামছুল আলম সাদ্দাম, লেখক ও সাংবাদিক

https://channelkhulna.tv/

খোলামত আরও সংবাদ

বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রয়াত শেখ মনিরুল ইসলাম মনি বেঁচে থাকুক আমাদের মনিকোঠায়

জীবনসংগ্রামে সফল এক সাহসি নারী বেগম রাজিয়া নাসের

‘‘বেগম রাজিয়া নাসের” দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের আওয়ামী লীগের প্রাণ

“বিনয়, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত যুবনেতা শেখ সুজন”

বয়লার মুরগি এখন স্কীকৃত নিম্ন আয়ের মানুষের খাবার

“বিএনপির হাতে হারিকেন, দেখে হাসে জনগণ”

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
উপদেষ্টা সম্পাদক: এস এম নুর হাসান জনি
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: শেখ মশিউর রহমান
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২২ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
ঢাকা অফিসঃ ৬৬৪/এ, খিলগাও, ঢাকা-১২১৯।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্তির জন্য আবেদিত।