চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবাগেরহাটে ছাত্রীর অভিভাবকের পরিবর্তে শিক্ষক ও শিক্ষকদের পছন্দসই ব্যক্তির বিকাশ একাউন্ট নাম্বার ব্যবহার করে ছাত্রী উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে।
জানা যায়, বাগেরহাট সদর উপজেলার শ্রীঘাট সদুল্যাপুর মহিলা দাখিল মাদ্রাসাটি নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো এই মাদ্রাসার গরীব ও মেধাবী ছাত্রীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছাত্রী উপবৃত্তি পায়। দেড়-দুই বছর আগে এই উপবৃত্তিগুলি ব্যাংক চেকের মাধ্যমে প্রদান করা হতো। শিক্ষা অফিস ও ব্যাংক কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানে এসে উবৃত্তির টাকা প্রদান করতো। এই টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগও কম ওঠেনি। পরে উপবৃত্তির টাকা প্রদানে সহজীকরণ ও উপবৃত্তির টাকা বিতরণে অনিয়ম রোধে সরকার বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। ছাত্রী অভিভাবকের মোবাইল নাম্বার দিয়ে উপবৃত্তিধারী ছাত্রীর বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়। এতে অনিয়ম ও দুর্নীতির সুযোগ থাকে না। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির কর্র্তপক্ষ বেশ কয়েকজন ছাত্রী ও ছাত্রীর অভিভাবকের নাম ব্যবহার ব্যবহার করলেও মোবাইল নম্বর (বিকাশ একাউন্ট) দিয়েছেন শিক্ষক বা শিক্ষকদের পছন্দসই ব্যক্তির নাম্বার। ফলে উপবৃত্তির টাকা উক্ত বিকাশ নাম্বারে আসে। এভাবে প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা আতœসাৎ হয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে চিহ্নিত বেশ কয়েকজন ছাত্রীর মোবাইল নাম্বারে ফোন করার চেষ্টা করা হলেও অধিকাংশ মোবাইল বন্ধ রয়েছে। আর যা’ খোলা রয়েছে তাদের অনেকেই ফোন ধরেনি। এদের মধ্যে ৩ জন ছাত্রী অভিভাবকের নামের পাশে উল্লেখিত মোবাইলে ফোন ধরেছে। এই ৩ জনের ২ জন উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক। অপর জন উল্লেখিত ছাত্রীর কেউ নয় বলে জানান। উক্ত দুই শিক্ষক জানান, মোবাইল একাউন্ট খোলার সময়ে উক্ত ছাত্রীরা অনুপস্থিত থাকায় তাদের মোবাইল ব্যবহার করা হয়েছে। উপবৃত্তির টাকা তুলে ছাত্রীদের দেওয়া হয়। লিখিত অভিযোগকারীরা জানান, উক্ত উপবৃত্তির টাকার কিছু অংশ আগে তাদের দেওয়া হলেও দীর্ঘদিন তারা উপবৃত্তির টাকা পায় না। শিক্ষকরা উক্ত টাকা তুলে আতœসাৎ করেছে বলে তাদের অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘উপবৃত্তির টাকা উত্তোলনের জন্য অভিভাবকের পরিবর্তে অন্য মোবাইল ব্যবহার করা হয়েছে। যেহেতু, প্রতিষ্ঠানটি নন-এমপিওভুক্ত। শিক্ষকরা বেতনতো পানই না, বরং প্রতিষ্ঠানের চলমান খরচ মেটানোও কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই উক্ত টাকা উত্তোলনের পর কিছু অংশ ছাত্রীদের আর বাকি অংশ প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয়। মাদ্রাসা সুপার মাও: বাকি বিল্লাহ অভিযোগের আংশিক সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন খরচ ও উন্নয়নে উক্ত টাকা ব্যয় করা হয়।’ উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার এসএম হিশামূল হক জানান, ‘অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’