মোড়েলগঞ্জ প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বারইখালী ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ৩৬ একর জমির আপেল কুল ক্ষেত সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে গেছে। আর এতে করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে ৭ চাষীর পরিবার।
সরেজমিনে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের উত্তর সুতালড়ী শেখপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম হাওলাদার ৬ একর জমিতে ২০০৭ সাল থেকে আপেল কূলের চাষাবাদ করে আসছেন। গত বছরের ফাগুন-চৈত্র মাসে ৩ শ’ আপেল কূল গাছের ছাটাই করেন এবং ৭ মাস যাবৎ পরিচর্যা করে ফলনের উপযোগী করে তোলেন। একই গ্রামের চাষী নজরুল ইসলাম বেপারী ৮ একর জমির ২৫০ টি ও একই ইউনিয়নের পায়লাতলা গ্রামের নাসির হাওলাদার ৭ একর জমির ২৬৭ টি আপেল কূল চাষাবাদ করেন। তাদের প্রতিটি গাছে হাজার হাজার কূল ধরেছিল।
তারা জানান, চলতি বছরের পৌষ মাসে মাঝামাঝি সময়ে ফল পরিপক্ক হয়ে বাজারজাত করার উপযোগী হবে । পরিবার পরিজন নিয়ে একটু সুখ স্বচ্ছন্দ ভোগ করবে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ২ ঘন্টার তান্ডবে তাদের সে স্বপ্নসাধ ধুলিসাৎ করে দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে সব গাছের ফল পড়ে গিয়ে আশা আকাঙ্খা স্বপ্নপূরনে আঘাত হেনেছে। এতে চাষী নজরুল ইসলাম হাওলাদার ক্ষতি হয়েছে ৫ লক্ষাধিক টাকার , নজরুল ইসলাম বেপারীর ৪ লক্ষ টাকার এবং নাসির হাওলাদারের ৩ লক্ষাধিক ক্ষতিসাধিত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে একই ইউনিয়নের পায়তলা গ্রামের চাষী ফারুক ফরাজী ৬ একর জমিতে আপেল কূলের চাষ করে ২ লক্ষ টাকার , দক্ষিণ সুতালড়ী গ্রামের মিজান শিকারীর ২ একর জমিতে ১ লক্ষ টাকার ও শেখপাড়া গ্রামের হেলালুজ্জামান খোকন ৭ একর জমিতে ৪ শ’ গাছ লাগিয়ে ৫ লক্ষ টাকা এবং রোকন তালুকদার ১০ একর জমিতে আপেল কূল চাষ করে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
বারইখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান লাল জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে তার ইউনিয়নে প্রতিটি সেক্টরেই ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে হাজার হাজার গাছপালা, নদীর তীরবর্তী কাঁচা ঘরবাড়ি, মৎস্য ঘের, রাস্তাঘাট ও ফসলি ক্ষেতের ক্ষতির পরিমান সবচেয়ে বেশি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, এ উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে কৃষি খ্যাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কুল চাষিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত তালিকা নিরুপন করে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন দপ্তরে প্রেরণ করা হবে। কৃষকদের সাময়িক চলমান প্রনোদনা কর্মসূচি থেকে সার বীজ, সহায়তা করা হচ্ছে।