বাগেরহাট প্রতিনিধি-বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বাগেরহাট সার্কেলের সহকারি পরিচালক একাই তিনটি সার্কেলের (জেলার) দায়িত্ব পালন করছেন। নিজের মূল দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলার দায়িত্বও পালন করছেন সহকারি পরিচালক প্রকৌশল মোঃ তানভীর আহমেদ। যার ফলে বাগেরহাট সার্কেলে সেবা প্রদানে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। বিড়ম্বনায় ও সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়ছেন যানবাহন মালিক ও চালকরা।
দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে বিআরটিএ‘র কোন অফিস ছিল না। বিআরটিএ খুলনা সার্কেল অফিসে সেবা নিতে যেতে হত বাগেরহাটবাসীকে। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে বাগেরহাটে বিআরটিএ সার্কেলের পূর্নাঙ্গ অফিস চালু হয়। এরমধ্যে নতুন সড়ক পরিবহন আইন পাশ হয়। আইনটির প্রয়োগ শুরু হওয়ার পর পর থেকে যানবাহন মালিক ও চালকরা পূর্বের থেকে অনেক বেশি সচেতন হয়ে যায়। এর ফলে বিআরটিএ কার্যালয়ে সেবা গ্রহিতার সংখ্যা পূর্বের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। প্রতিদিন শতাধিক লোক বিভিন্ন সেবা নিতে আসতে শুরু করে বিআরটিএ কার্যালয়ে। গাড়ির নিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্র্যূাক্স টোকেন, ফিটনেসসহ বিভিন্ন সেবার জন্য আসেন এ কার্যালয়ে। চালুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সেবার জন্য ৩ হাজারের অধিক আবেদন পড়েছে। একজন সহকারি পরিচালক, একজন পরিদর্শক, একজন অফিস সহকারি, একজন অফিস সহায়ক এবং একজন সিল মেকানিকের পদ রয়েছে এই সার্কেলে। জেলার বিপুল পরিমান এই জনগোষ্ঠির সেবা দেওয়ার জন্য এই জনবল যথেষ্ট নয়। এরমধ্যে জানুয়ারি মাস থেকে সহকারি পরিচালক অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন পিরোজপুর ও ঝালকাঠিতে। যার ফলে বাগেরহাট সার্কেলে সেবা প্রদানে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। বিড়ম্বনায় পড়ছেন যানবাহন মালিক ও চালকরা।
বাগেরহাট শহরের পুরাতন কোট চত্তর এলাকায় বিআরটিএর অফিসে সেবা নিতে আসা যানবাহনের মালিকরা জানান, নতুন সড়ক পরিবহন আইনকে স্বাগত জানিয়ে এবং দায়িত্ববোধ থেকে তারা গাড়ির কাগজপত্র নবায়ন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করছেন। তবে সময় মতো সেবা না পেয়ে অনেকে হতাশায় পড়ছেন বলে জানান যানবাহন মালিকরা।
মটর সাইকেলের মালিকানা পরিবর্তন করতে আসা শেখ সোহেল হোসেন বলেন, গেল বছর ১৪ নভেম্বর মটর সাইকেলের মালিকানা পরিবর্তন করতে টাকা জমা দিয়েছি। এখনও আমার কাজটি হয়নি। অনেকবার এসেছি অফিসে। কিন্তু মালিকানা পরিবর্তণ না হওয়ায় সড়কে সার্জেন্টরা ঝামেলা করে।
রফিকুল ইসলাম বলেন, মটর সাইকেলের ডিজিটাল প্লোটের জন্য অনেক আগে টাকা জমা দিয়েছি। কিন্তু এখনও পাইনি।
আল আমিন বলেন, নতুন গাড়ি কিনেছি। গাড়ির রেজিষ্ট্রেশনের জন্য কত টাকা জমা দেব কোন ব্যাংকে দিব তা জানতে অফিসে এসেছি। কিন্তু এ টেবিল থেকে ও টেবিলে যেতে বলছে। কেউ বুঝিয়ে বলছে না কি করতে হবে।
বাগেরহাট বিআরটিএর কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন আইন হওয়ার পর অনেকেই ১০-২০ বছর পুরনো গাড়ির কাগজপত্র ঠিক করতে আসছেন। গাড়ির কাগজপত্র নবায়ন, রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স ও ফিটনেস সনদসহ সংশ্লিষ্ট সেবা দিতে এখানে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কার্যক্রম চলছে।
বাগেরহাট বিআরটিএর সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী তানভীর আহম্মেদ বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কার্যকর হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। আমাদের প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় আমাদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়।