বাগেরহাটের রামপালে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত রেজাউল শেখ হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার, বাদী ও সাক্ষিদের নিরপত্তার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (০৩ মার্চ) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে রামপাল উপজেলার ডাকরা গ্রামের নিহত রেজাউল শেখের মেয়ে নাছরিন আক্তার এই সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় নিহত রেজাউল শেখের স্ত্রী স্বপ্না বেগম, ছেলে মোঃ রানা শেখ, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আব্দুল হাই উপস্থিত ছিলেন।
রেজাউল শেখের স্ত্রী স্বপ্না বেগম বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, মনিরুল ইসলামসহ কয়েকজন আমার স্বামী রেজাউল শেখকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে বেধরক মারধর করেন। পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় আমার স্বামীকে খুলনার ডক্টরস পয়েন্ট হাসপাতালে ভর্তি করি।অবস্থার অবনতি হলে ২২ ফেব্রুয়ারি খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয় আমার স্বামীকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই দিন আমার স্বামী মারা যায়। পরবর্তীতে আমি ইউপি সদস্য মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, মনিরুল ইসলামসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে রামপাল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করি।এজাহার নামীয় ৮ আসামীর মধ্যে মাত্র একজ আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছেন। কিন্তু ইউপি সদস্য মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রতিনিয়ত আমাদের হুমকী দিয়ে যাচ্ছে।মামলা তুলে না নিলে আমার ছেলে ও মেয়েকে মেরে ফেলারও হুমকী দিচ্ছে।একটি হত্যার শাস্তিও যেমন ফাসি, একাধিক হত্যার শাস্তিও ফাসি, তাই তোদের পরিবারের সবাইকে হত্যা করে তারপর মামলা চালাব বলেও হুমকী দিচ্ছে ইউপি সদস্য মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আব্দুল হাই বলেন, মারধরের ঘটনার দিন আমি ছিলাম।ইউপি সদস্য মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন ও তার লোকেরা মারধর করেছে। আমি মামলার সাক্ষী।কিন্তু ইউপি সদস্য মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রভাবশালী হওয়ায় বাদী ও সাক্ষীদের নানারকম হুমকি-ধামকী দিচ্ছেন।একজন হত্যা মামলার আসামী প্রকাশ্য দিবালোকে বাদী ও সাক্ষীকে হুমকী দিচ্ছে এটা খুবই হতাশাব্যঞ্জক।অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে রেজাউল শেখ হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় আনার দাবি জানানিএই আওয়ামী লীগ নেতা।
পিতা হারানো নাছরিন আক্তার ও মোঃ রানা শেখ বলেন, তারা আমার বাবাকে মেরে ফেলেছে। এখন আমাদের মেরে ফেলতে চায়। আমরা কি এদেশের নাগরিক না। আমাদের কি ভালভাবে বাঁচার অধিকার নেই এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন দুই ভাই-বোন।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সামসুদ্দিন বলেন, হত্যা মামলার এজাহারে থাকা মনিরুল ইসলাম নামের এক আসামীকে গ্রেফতার করেছি। আদালতের নির্দেষে সে এখন জেল হাজতে রয়েছে। অন্য আসামীদের আটকের জন্য পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।