করোনাভাইরাসে কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও গুরুত্বপূর্ণ বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। বুধবার (১০ জুন) অধিবেশনের শুরুর দিনে শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভিডিও কলের মাধ্যমে অধিবেশনে যোগ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন।
শোক প্রস্তাবে অংশ নিয়ে বক্তব্য কালে করোনাভাইরাসের প্রসঙ্গ টেনে মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘আমরা বাজে একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।’ বিরোধী দলের এই সংসদ সদস্য তিনটি দেশের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড ও কানাডা তিনটি দেশের কথা জানি। তারা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তারা সংসদ পরিচালনা করছে। তারা অনেকেই (সংসদে) আসেন না। সংসদ সদস্য হিসেবে আমাদের সংসদে আসতে অসুবিধা নেই। আমরা যেহেতু জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেছি, সেই সূত্রে বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না (সংসদে) আসলেও কিন্তু… উনি যদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাড়িতে থেকে যদি কথা বলতেন আমরা নিশ্চিন্ত হতাম, দেশের যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে এগুলো কোনো না কোনো একদিন আমরা করতে পারবো।’
মশিউর রহমান রাঙ্গা তার উদ্বেগের কথা জানিয়ে বলেন, ‘উনি (শেখ হাসিনা) না থাকলে আমাদের সবার জন্য… একটা অসুবিধা বোধ করি, দেশটা চালাবে কে?’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকার দরকার নেই, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যাকে প্রয়োজন রয়েছে। আমি আপনার (স্পিকার) মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, যদি সম্ভব হয় আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বাসা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই পার্লামেন্টে অংশগ্রহণ করুন।’
এসময় স্পিকার তাকে শোক প্রস্তাবের উপরে আলোচনা করার কথা বলেন।
এরপরেই শোক প্রস্তাবে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি সংসদ সদস্য রাঙ্গার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘জন্ম যখন হয়েছে মরতেই হবে। তাই গুলি খেয়ে মরি, বোমা খেয়ে মরি, করোনাভাইরাসে মরি, অসুস্থ হয়ে মরি। এখন কথা বলতে বলতেও মরে যেতে পারি। মৃত্যু যখন অবধারিত, তখন মৃত্যুকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি ভয় কখনও পাইনি, পাবো না। আল্লাহ জীবন দিয়েছেন, জীবন আল্লাহ একদিন নিয়ে যাবেন—এটাই আমি বিশ্বাস করি। তিনি মানুষকে কিছু কাজ দেন, সেই কাজটুকু করতে হবে। আল্লাহর লিখিত আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, যতক্ষণ এই কাজটুকু শেষ না হবে, ততক্ষণ কাজ করে যাবো। কাজ শেষে আমিও চলে যাবো। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি এখানে (বাংলাদেশে) বেঁচে থাকার জন্য আসিনি। জীবনটা বাংলার মানুষের জন্য বিলিয়ে দিতে এসেছি। এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভয়ের কী আছে? জীবনের মায়া করলে কিংবা ভীত হলে ৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে আসতাম না।’