মিয়ানমারের অনেক অঞ্চলে বিদ্যুৎ নেই। দেশটির বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সরকারি সংস্থাগুলো বলছে, ‘যান্ত্রিক ত্রুটির’ কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টা থেকে মিয়ানমারের প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনসহ দেশটির বিশাল অংশজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেয়। মিয়ানমারের প্রধান বিদুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইয়াঙ্গুন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই করপোরেশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ইয়াঙ্গুনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বিপর্যয় ঘটেছে।’
দেশটির ইরাবতি নদীভিত্তিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ম্যাগওয়েও বিবৃতিতে একই তথ্য জানিয়েছে।তবে এই ত্রুটি সারাতে কত সময় লাগবে, তা বিবৃতিতে উল্লেখ করেনি দুই প্রতিষ্ঠানের কোনওটিই।
এদিকে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে এ বিষয়ক পোস্ট দেওয়া শুরু করেছেন মিয়ানমারের নেটিজেনরা। দেশটির গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীদের বক্তব্য— গ্রেপ্তার এনএলডি নেত্রী অং সান সু চি মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় মিয়ানমারে যে আন্দোলন চলছে—তা দমনের কৌশল হিসেবেই বিদুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে জান্তা সরকার।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখলের পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয় মিয়ানমারে। রাজধানী নেইপিদো, প্রধান শহর ইয়াঙ্গুন, দ্বিতীয় প্রধান শহর মান্দালয়সহ দেশটির বিভিন্ন শহরে লাখ লাখ আন্দোলনকারী সড়কে নেমে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল শুরু করেন, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
বিক্ষোভের প্রথম পর্যায়ে সামরিক বাহিনী দৃশ্যত সংযমের পরিচয় দিলেও গতমাসের শেষদিক থেকে ক্রমশ অসহিষ্ণু হয়ে উঠতে থাকে। আন্দোলন দমনে রাবার বুলেট-জলকামান-টিয়ারশেলের পরিবর্তে প্রাণঘাতি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাবাহনীর সদস্যদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদর সংঘর্ষে এ পর্যন্ত দেশটিতে মারা গেছেন অর্ধ শতাধিক আন্দোলনকারী। সর্বশেষ শুক্রবার মান্দালয়ে পুলিশের গুলিতে এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।