সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা শনিবার , ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
বিধবা ভাতা, জনপ্রতি ব্যাংক কর্মকর্তাই রাখেন ১৫০০ | চ্যানেল খুলনা

বিধবা ভাতা, জনপ্রতি ব্যাংক কর্মকর্তাই রাখেন ১৫০০

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহে কালীগঞ্জে বিধবা ভাতার টাকা কম দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধের। টাকা তুলতে গেলে এসব সুবিধাভোগী বিধবাদের ৪ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ৩ হাজার টাকা দেয়া হয়। এর প্রতিবাদ করলে ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেন, ‘এই টাকা নিলে নেন, না নিলে চলে যান। সোমবার এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বিধবা গৃহপরিচারিকা আখিরন নেছা সোমবার সোনালী ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখায় গিয়েছিলেন সরকারের দেয়া বিধবা ভাতার টাকা উত্তোলন করতে। তার পাওনা ভাতা ও ঈদ বোনাসসহ চার হাজার ৫০০ টাকা। ব্যাংকের বইয়ে চার হাজার ৫০০ টাকা লিখলেও তার হাতে দেন তিন হাজার টাকা। বাকি টাকার কথা জানতে চাইলে বলা হয়, ‘বেশি বুঝলে মোটেও পাবেন না।’ একইভাবে কদবানুর হাতেও তিন হাজার। তাকেও বলা হয়, ‘এই টাকা নিলে নেন, না নিলে চলে যান।’

আখিরন নেছা, কদবানু শুধু নয়, এ জাতীয় অসংখ্য বিধবা নারীর টাকা কম দিয়েছেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পরে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার বিষয়টি জানতে পারলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তার উপস্থিতিতে ১৫ জনের বাকি এক হাজার ৫০০ করে টাকা দেয়া হয়েছে। তার দাবি আরো অসংখ্য মানুষের সঙ্গে এটা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের মাধ্যমে চার হাজার ৯ জন বিধবা ভাতা, আট হাজার ৪০০ জন বয়ষ্ক ভাতা ও দুই হাজার ১৭৭ জন প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে থাকেন।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. কৌশিক খান জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তাদের বরাদ্দ সব চলে এসেছে। সোমবার কালীগঞ্জ পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়নের ভাতাপ্রাপ্তদের মাঝে টাকা বিতরণ করা হয়েছে। যদিও ওই দিন পৌরসভা এলাকায় ভাতা বিতরণের কথা না। এই পৌর এলাকায় অনিয়মটা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, মাসে বিধবা ভাতা ৫০০ টাকা, বয়ষ্ক ভাতা ৫০০ টাকা ও প্রতিবন্ধীরা ৭৫০ টাকা করে পেয়ে থাকেন।

যাদের টাকা কম দেয়া হয়েছে তাদের একজন কদবানু (৮০)। বয়সের ভারে এখন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না। কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়া এলাকায় মাত্র চার শতক জমির ওপর তার টিনের চালায় বসবাস। স্বামী গোলাম রসুল প্রায় ৪৫ বছর পূর্বে মারা গেছেন। সেই থেকে তিনি বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে রান্নার কাজ করে সংসার চালান। তার বড় ছেলে আসাদুল ইসলাম বাদাম বিক্রি করেন, ছোট ছেলে সাইদুল ইসলাম চা বিক্রেতা। একমাত্র মেয়ে আকলিমা খাতুনকে বিয়ে দিয়েছেন।

কদবানু জানান, ছেলেদের কষ্টের সংসার। এই ভাতা দিয়ে ওষুধপত্র কিনতে হয়। সোমবার টাকা তুলতে গেলে ৪৫ শত টাকার পরিবর্তে ৩ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এটার কারণ জানতে চাইলে বলা হয়েছে নিলে নেন, না নিলে চলে যান। কদবানু কথাগুলো বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন, বলেন তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে।

ব্রীকফিল্ড এলাকার বাসিন্দা আখিরন নেছার স্বামী আবু তাহের মারা গেছেন ২৪ বছর হয়েছে। এক ছেলে রবিউল ইসলাম রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। এক মেয়ে ফাতেমা খাতুনের বিয়ে দিয়েছেন। নিজে বাড়ির সামনে টোং দোকানে চা বিক্রি করেন। এই চা বিক্রি আর বিধবা ভাতার টাকায় তার সংসার চলে। সেই টাকা কম দেয়ার পর তিনি এলাকায় ফিরে শফিকুজ্জামান রাসেলকে বিষয়টি খুলে বলেন। তিনি স্থানীয় এমপির নজরে নিয়ে আসার পর তার বাকি টাকা ফেরত পেয়েছেন। এভাবে অনেককে চার হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে এক হাজার ৫০০ টাকা কম দেয়া হয়েছে। যারা প্রতিবাদ করতে না পেরে বাড়ি ফিরে গেছে।

১২ মে, মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে সোনালী ব্যাংকের কালীগঞ্জ শাখায় গিয়ে দেখা যায়, গত সোমবার যাদের টাকা কম দেয়া হয়েছিল মঙ্গলবার তাদের টাকা দেয়া হচ্ছে।

সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজ কর্মী রবিউল ইসলাম জানান, তারা খোঁজখবর করে আরো ১৪ জনের সন্ধান পেয়েছেন। তাদের বাকি এক হাজার ৫০০ টাকা পাওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকে এসেছেন এবং ইতোমধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের সেই টাকাও পরিশোধ করেছেন। খোঁজ নিচ্ছেন আরো কেউ টাকা কম পেয়ে থাকলে তার টাকা পাওয়ার ব্যবস্থাও নিবেন বলেও জানান তিনি।

এ সময় নার্গিস বেগম জানান, তিনি এক হাজার ৫০০ টাকা কম দেয়ার কারণ জানতে চাওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাড়িয়ে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. কৌশিক খান জানান, সকল পর্যায়ের ভাতাপ্রাপ্তদের ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত ভাতার টাকা চলে এসেছে। তারাও এই টাকা ছাড় করেছেন। এখন শুধুমাত্র বিতরণ করার পালা।

তিনি আরো বলেন, ‘ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই দিন সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নে টাকা বিতরণ করার কথা থাকলেও করেছেন পৌরসভা এলাকায়। যেখানে এই অনিয়মটি হয়েছে। তবে এটা কোনো ভাবেই ঠিক হয়নি। ভাতাপ্রাপ্তদের যে বই আছে সেখানে চার হাজার ৫০০ টাকা লিখে তিন হাজার দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার জানান, সোমবার দুপুরে তার কাছে খবর যায় অসহায় মানুষের টাকা আত্মসাত করা হচ্ছে। এই খবর পেয়ে তিনি ব্যাংকে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে ঘটনা সঠিক দেখেন এবং উপস্থিত কমপক্ষে ১৫ জনের কথা শুনেন। এরপর তাদের বাকি টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ভুল বলে টাকা ফেরত দেন।

তিনি আরো জানান, এখানে এসে জানতে পারেন ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মীও ভাতা নিতে আসা অসহায় নারীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১০০ করে টাকা নিচ্ছেন। এছাড়াও প্রতিবন্ধীদের সব টাকা দেয়া হচ্ছে না। এসকল অনিয়মের বিষয়ে তিনি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। তাৎক্ষণিক ভাবে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপককে বিষয়গুলো অবহিত করে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বলেছেন।

এ বিষয়ে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক শামীম রেজা জানান, অনেক কাজের মধ্যে এই কাজটি করতে গিয়ে তার অফিসাররা ভুল করেছেন। পরে সব সমাধান করে ফেলা হয়েছে। তারপরও বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান।

https://channelkhulna.tv/

সংবাদ প্রতিদিন আরও সংবাদ

ঢাকা মেডিকেল থেকে ‘ভুয়া নারী চিকিৎসক’ আটক

সাবেক আইজিপি ও কেএমপি কমিশনারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আদালত চত্বরে সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্রের ওপর ডিম নিক্ষেপ

আমির হোসেন আমু গ্রেপ্তার

কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের ঢুকতে দেওয়া হবে না তাবলিগ জামাত

কালীগঞ্জে ভারতীয় গরু আনতে গিয়ে যুবক আটক

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।