আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষায় বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও পাঁচটি কেন্দ্রে নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। পাশাপাশি বিশৃঙ্খলাকারীদের বার কাউন্সিলের সব পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া চারটি কেন্দ্রের পরীক্ষা বহাল রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সভা শেষে বার কাউন্সিলের সচিব মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলা হয়, গত ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট লিখিত পরীক্ষার নয়টি কেন্দ্রের মধ্যে চারটি কেন্দ্রে (আজিমপুর গার্লস কলেজ, শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ) অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষার কার্যক্রম বহাল রাখা হয়েছে। অপর পাঁচটি কেন্দ্রে (মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, বিসিএসআইআর উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ) অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় গোলযোগ ও বিশৃঙ্খলা সংঘটিত হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে। এই পাঁচটি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষা যত দ্রুত সম্ভব গ্রহণ করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যেসব পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে গোলযোগ সৃষ্টি করে পরীক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করাসহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরীক্ষা গ্রহণে বাধা প্রদান, সাধারণ পরীক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নিগৃহীত করে জোরপূর্বক তাদের উত্তরপত্র বিনষ্ট করে এবং পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট ও শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে পরীক্ষাকেন্দ্র ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধন করেছে, সর্বোপরি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (ফেসবুক, ইউটিউব) ব্যবহার করে পরীক্ষা বানচালে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ বার কাউন্সিলের পরবর্তী পরীক্ষাসমূহে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হবে।
এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কঠিন প্রশ্নের আসার অজুহাতে ওই দিন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের একটি দল পরীক্ষার কেন্দ্রে কেন্দ্রে তাণ্ডব চালিয়েছে। এ সময় তারা পরীক্ষার্থীদের খাতাপত্র টেনে ছিঁড়ে ফেলে এবং তাদের পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেয়। তাণ্ডবের কারণে পাঁচটি কেন্দ্রে পরীক্ষা পণ্ড হয়ে যায়।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা জানান, পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, রাজধানীর নয়টি কেন্দ্রে ১৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়। এতে প্রায় ১৩ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নেয়।
এদিকে বার কাউন্সিলের এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেক পরীক্ষার্থী। তারা বলছেন, যারা পরবর্তীতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন, তারা ভালো করে প্রস্তুতি নিতে পারবেন। পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন তারা বুঝে ফেলেছেন।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক পরীক্ষার্থী বলেন, বার কাউন্সিল প্রশ্নের গতানুগতিক পদ্ধতি ছেড়ে ভিন্ন পন্থা বেছে নিয়েছে। ফলে আমরা প্রশ্ন বুঝতেই অনেক সময় চলে যায়। আর যারা ফের পরীক্ষা দিচ্ছেন, তারা তো প্রশ্নের ধরন বুঝতে পেরেছেন। তারা এখন প্রস্তুতি নিতে পারবেন। সবার পরীক্ষা নতুন করে নেয়ান দাবি জানান এ শিক্ষানবিস আইনজীবী।