অভিষেকেই অতিমানবীয় ইনিংস খেললেন ক্যারিবীয় মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান কাইল মায়ার্স। চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের স্পিনারদের তুলোধোনা করে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকালেন। ৩০২ বল খেলে ২১০ রানে থাকলেন অপরাজিত।
আর আর এ অনবদ্য ইনিংসে ভর করে ইতিহাস গড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে চতুর্থ ইনিংসে সবোর্চ্চ রান তাড়া করে ৩ উইকেটে জয় পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন কাইল মায়ার্সও।
বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার কাইল মায়ার্স, যিনি তার অভিষেক টেষ্ট ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন, তাও আবার ৪র্থ ইনিংসে। এমন রেকর্ড নেই বিশ্বের আর কোনো ক্রিকেটারের।
হোল্ডার, পোলার্ড, হেটমায়াররা আসলে হয়তো বাংলাদেশ সফরে টেস্ট দলে সুযোগই পেতেন না কাইল মায়ার্স। আর সুযোগ পেয়ে অভিষেক টেস্টে ইতিহাস গড়লেন ২৮ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডার। দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরিতে অভিষেক রাঙালেন তিনি।
আজ দ্বিতীয় সেশনে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি হাঁকান মায়ার্স। তখনই বেশ কয়েকটি রেকর্ডে ভাগ বসান তিনি।
রেকর্ড বলছে, অভিষেকে সেঞ্চুরি করা ১৪তম ক্যারিবীয় ক্রিকেটার কাইল মেয়ার্স। আর অভিষেকে চতুর্থ ইনিংসে সেঞ্চুরি মায়ার্সের আগে টেস্ট ইতিহাসেই করতে পেরেছেন কেবল ৭ জন। সবশেষ ২০১২ সালে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ দু প্লেসি এ কৃতীত্ব দেখান।
টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে সেঞ্চুরি করা সবসময়ই কঠিন। কাজটা এশিয়ার মাটিতে আরও কঠিন। সেই কাজটা অভিষেক টেস্টে করে ফেলেছেন কাইল মায়ার্স। এর পর এক কিংবদন্তির রেকর্ডকে পেছনে ফেলেন।
সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে প্রথমে ইতিহাসে ১৫তম ব্যাটসম্যান হিসেবে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলেন মায়ার্স। ওই ১৫ জনের মধ্যে পেছনে ফেলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংকে। এরপর পেছনে ফেলেন সাবেক কিউই অধিনায়খ ড্যানিয়েল ভেট্টরিকে। চতুর্থ ইনিংসে ভেট্টরির সর্বোচ্চ রান ১৪০। সে রান মায়ার্স পার করেছেন চা-বিরতির আগেই।
এবার আসা যাক বাংলাদেশের বিপক্ষের রেকর্ডে। বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেকে সেঞ্চুরি মেয়ার্সের আগে করতে পেরেছেন কেবল ৩ জন।
২০০১ সালে পাকিস্তানের তৌফিক উমর মুলতান টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। ২০০৩ সালে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার দলে অভিষেক ঘটে জ্যাক রুডলফের। সে ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন রুডলফ। একই বছর করাচিতে পাকিস্তানের ইয়াসির হামিদ সেঞ্চুরি করেছিলেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। তাও আবার দুই ইনিংসেই।
তবে শতককে দ্বিশতকে নিয়ে নিজের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেলেন নিজেই। বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেষ্টের চতুর্থ ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করার মহাকাব্য লিখলেন মায়ার্স।