বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাস শেষের পথে। দেশে দেশে শুরু হয়েছে ঈদুল ফিতরের প্রস্তুতি। অপেক্ষা চাঁদ দেখার। শাওয়ালের নতুন চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হবে ঈদুল ফিতর। তবে তা নির্ভর করছে আপনি বিশ্বের কোন অংশে অবস্থান করছেন এবং কখন আপনার দেশে চাঁদ দেখা যাবে তার ওপর।
আসন্ন ঈদুল ফিতর বিশ্বের প্রায় সকল মুসলিম দেশে একই দিনে তথা আগামী সোমবার (৩১ মার্চ) অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি অবিশ্বাস্যভাবে সৌদি আরব ও বাংলাদেশেও একই দিনে ঈদ হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
বৈজ্ঞানিক মূল্যায়ন, জ্যোতির্বিদ্যাগত গণনা এবং আধুনিক পর্যবেক্ষণগত তথ্যের ভিত্তিতে শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরি (২০২৫ সালের) ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখার সম্ভাবনা নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে স্পেস অ্যান্ড আপার অ্যাটমোস্ফেয়ার রিসার্চ কমিশন (সুপারকো)।
সৌদি আরব
গবেষণা কেন্দ্রটি বলেছে, ২৯ মার্চ বিকেল ৩টা ৫৮ মিনিটে পিএসটি সময় শাওয়ালের নতুন চাঁদ (সংযোগ) ঘটবে। তবে, চাঁদের অবস্থান, সূর্যের সঙ্গে এর কোণিক বিভাজন, সূর্যাস্তের সময় উচ্চতা এবং বায়ুমণ্ডলীয় পরিস্থিতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির ওপর চাঁদের গোচর হওয়ার সম্ভাবনা নির্ভরশীল।
তাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, সৌদি আরবে আগামী ২৯ মার্চ চাঁদ দেখা প্রায় অসম্ভব। কারণ, মক্কায় চাঁদের বয়স সেদিন সূর্যাস্তের সময় প্রায় ৫ ঘণ্টা হবে। এর ফলে, সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যে ৩০ মার্চ চাঁদ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই হিসেবে তারা ৩১ মার্চ ঈদ উদযাপন করতে পারে।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান
তাদের গবেষণা অনুযায়ী, পাকিস্তানে ৩০ মার্চ চাঁদ দেখার সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। এর ফলে, পাকিস্তানে রোজা ২৯টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে হিসেবে পাকিস্তানেও ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য প্রথম দিন আগামী ৩১ মার্চ। একইভাবে বাংলাদেশ ও ভারতেও ওইদিন তথা ৩১ মার্চ ঈদ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২৯ মার্চ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় নবচন্দ্রের বয়স হবে মাত্র ১ ঘন্টা ১৬ মিনিট। এ চাঁদ খালি চোখে তো নয়ই, টেলিস্কোপ দিয়েও দেখা যাবে না। পরদিন অর্থাৎ ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় ঢাকার আকাশে যখন চাঁদ উঠবে তখন সেটির বয়স ২৫ ঘন্টা ১৬ মিনিট। আকারে কিছুটা ছোট হবে, তবে খালি চোখে দেখা যাবে। তাই বাংলাদেশে ২৯ রোজা এবং ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর উদযাপিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মরক্কো, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া
এদিকে আফ্রিকার দেশ মরক্কোতেও ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য দিন ৩১ মার্চ। আর ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশের একদিন আগে রোজা শুরু করেছিল। মালয়েশিয়া করেছিল বাংলাদেশের সঙ্গে। কিন্তু দুটো দেশেই এবার ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা বাংলাদেশের সঙ্গে। কারণ ২৯ মার্চ যখন জাকার্তায় সূর্যাস্ত হবে তখন নবচন্দ্রের বয়স মাত্র ২ মিনিট, এ চাঁদ কোনোভাবেই দেখা যাবে না। আর কুয়ালালামপুরে যখন সূর্যাস্ত হবে তখন চাঁদের বয়স হবে ২৫ মিনিট। তাই দেশ দুটোতে ৩১ মার্চ ঈদ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা।
মধ্যপ্রাচ্য
সৌদি আরবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশই ঈদ উদযাপন করে থাকে। যেমন: মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, সিরিয়া ও ফিলিস্তিনেও ৩১ মার্চ ঈদ হতে পারে।
আমেরিকা ও ইউরোপ
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো পশ্চিমা দেশগুলোতে অবস্থানরত মুসলমানরা সৌদি আরবের ঈদের ঘোষণার অপেক্ষায় থাকেন।
অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডস
অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ দক্ষিণ গোলার্ধের কিছু দেশে সৌদি আরবে ঈদ উদযাপনের পরদিন অর্থাৎ আগামী মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ঈদ উদযাপিত হতে পারে।