খুলনায় বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ‘শেখ বাড়ি’র একটি অংশ। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ঘোষণা দিয়ে ওই ভাঙচুর শুরু করেন। রাতভর দুটি বুলডোজার চালিয়ে বাড়ির প্রধান ফটক, দেয়ালসহ বেশির ভাগ অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। খুলনা নগরের ময়লাপোতা এলাকায় অবস্থিত বাড়িটি ‘শেখ বাড়ি’ নামে পরিচিত।
গতকাল রাতেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটিও বুলডোজার দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে।
বাড়িটি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ আবু নাসেরের বাড়ি। এ বাড়িতে শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বিসিবির সাবেক পরিচালক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা শেখ সোহেল উদ্দিনসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা বসবাস করতেন। মূলত ওই বাড়ি থেকেই পদ্মার এপারের আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হতো।
ভাঙচুরের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে উৎসুক মানুষের ভিড় ছিল। তাঁদের অধিকাংশই মুঠোফোনে ছবি, ভিডিও ও সেলফি তুলে মুহূর্তটাকে ক্যামেরাবন্দী করেন।
বাড়িটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারকে তাড়ানোর জন্য ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রাম শুরু করে, সেটি শেষ হয়েছে ২০২৪ সালে এসে। ফ্যাসিস্ট সরকার নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে হাজার হাজার মানুষকে মেরেছে, তারপরও ন্যূনতম কোনো অনুশোচনা নেই। আওয়ামী লীগের যত ‘কেবলা’ আছে, তার মধ্যে শেখ বাড়ি ছিল পদ্মার এপারের আওয়ামী লীগের ‘কেবলা’। বাংলার জমিনে আওয়ামী লীগের কোনো কেবলা থাকবে না, আওয়ামী লীগ থাকবে না, আওয়ামী লীগের কোনো দালাল থাকবে না। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নামে কোনো শব্দ উচ্চারিত হবে না।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে শেখ বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনের রাস্তায় উৎসুক মানুষের ভিড়। অনেকেই ভেঙে দেওয়া বাড়ির রড খুলে নিয়ে যাচ্ছেন। বাড়ির অবশিষ্ট অংশটুকু কেন ভেঙে ফেলা হলো না, সেটা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে অনেককে।