চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবাংলাদেশ বোধহয় পেলো ক্রিকেট ইতিহাসের সব থেকে বড় লজ্জা। প্রায় সারাদিনের বৃষ্টির পরেও লজ্জার হার থেকে বাঁচতে পারলো না বাংলাদেশ। সারাদিনের বৃষ্টিতে বাংলাদেশ ম্যাচ প্রায় বাঁচিয়েই ফেলেছিলো। কিন্তু শেষ বিকেলে বৃষ্টি থামল। রোদ উঠলো। খেলা হলো সামান্য সময়। সেই অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ বাংলাদেশের বাকি চার উইকেট। আফগানিস্তান ম্যাচ জিতলো ২২৪ রানে। প্রথম ইনিংসে ২০৫ রানে গুটিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে করলো আরো বাজে ব্যাটিং! এবার ইনিংস শেষ ১৭৩ রানে। আর একই সাথে টেস্ট ইতিহাসে মাত্র তৃতীয় ম্যাচে এসে জয় পেয়ে ইতিহাস গড়লো আফগানিস্তান।
প্রথমদিন থেকে শুরু হওয়া ব্যর্থতা পঞ্চমদিনেও অব্যাহত ছিলো সাকিব আল হাসানের। বৃষ্টির কারণে শেষদিন ৯০ ওভারের জায়গায় কমে আসে খেলা, তাতে ২০ ওভারেরও কম সময় টিকতে পারল স্বাগতিকরা। ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করা সাকিব-সৌম্যদের ১৭৩ রানে অলআউট করে দিয়ে আফগানরা মাতল উল্লাসে। পঞ্চম ও শেষদিনে মাত্র ২০ ওভার বল মাঠে গড়ায়। তাতেই লিখে দেয় চট্টগ্রাম টেস্টের ভাগ্য। নিজেদের ইতিহাসে তিন নম্বর টেস্ট খেলতে নেমে দ্বিতীয় জয় তুলে নিলো আফগানিস্তান।
ভারতের কাছে অভিষেক টেস্টে বিপর্যয়কর হারের পর দ্বিতীয় টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে তাদেরই ঘরের মাঠে হারিয়ে নিজেদের জাত চেনায় আফগানরা। এবার বাংলাদেশকেও নিজের মাটিতে হারিয়ে দিলো তারা। একই সঙ্গে জয় দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট থেকে মোহাম্মদ নবিকে বিদায় দিল আফগানরা।
সারাদিন যদি খেলাটা হতো তাহলে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জটা আরো বড় থাকতো। কিন্তু শেষ বিকেলের সামান্য সময়ের জন্য খেলার সময় যখন বরাদ্দ হলো তখন হার বাঁচানোর সুবিধা বাংলাদেশের পক্ষেই গেলো। অথচ সেই সুযোগও কাজে লাগাতে পারলো না বাংলাদেশ। রশিদ খান ও জহির খানের স্পিনের কাছে শেষ বাংলাদেশের শেষ বিকেলে চট্টগ্রাম টেস্ট হেরে গেল বাংলাদেশ অল্পতেই! শেষ বিকেলে যখন খেলা শুরু হলো প্রথম বলেই সাকিব আল হাসান আউট। অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরে পড়া বলে ব্যাট চালিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক উইকেট ছুঁড়ে দিলেন। বাংলাদেশের পতনের সেই শুরু। খানিকবাদে মেহেদি হাসান মিরাজ আফগান অধিনায়ক রশিদ খানের গুগলি বুঝতেই পারলেন না। পরিষ্কার এলবি। কিন্তু রিভিউ নিলেন মিরাজ। রিভিউটাও নষ্ট করলেন।
তাইজুল ভুল আম্পায়ারিংয়ের শিকার। বল তার ব্যাটে লাগলো। কিন্তু আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে জানালেন এলবি। কিছু করার নেই। কারণ ততক্ষণে রিভিউও শেষ। সৌম্য সরকার শেষ উইকেটে নাঈম হাসানকে নিয়ে ম্যাচ বাঁচিয়ে দেবেন-এমন একটা আশা তখনো ছিলো বাংলাদেশ শিবিরে। কারণ খেলার সময় তো তখন অল্প বাকি। কিন্তু রশিদ খান যে এই ম্যাচ জেতার পণ নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। তাকে যে থামাতে পারলো না পুরো বাংলাদেশ মিলেও! প্রথম ইনিংসে ৫৫ রানে ৫ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৯ রানে ৬ উইকেট। ম্যাচে ১১ উইকেট। সঙ্গে একটি হাফসেঞ্চুরি। বাংলাদেশের বিপক্ষে এই টেস্ট ম্যাচকে পুরোপুরি নিজের নামে করে নিলেন আফগান অধিনায়ক। বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম টেস্টের পঞ্চম ও শেষদিনের খেলার আড়াই সেশন নষ্ট হলো। মাঝে একবার খেলা হলো মাত্র ১৩ বলের। তারপর আবার লম্বা সময় ধরে খেলা বন্ধ, বৃষ্টির দাপটে।
সকালের সেশনটা গেলো বৃষ্টি দেখতে দেখতে। খেলা শুরু হলো ঠিক দুপুর ১টায়। কিন্তু মাত্র ৭টি পরেই ফের বৃষ্টি। ওই বৃষ্টি যখন থামলো তখন ঘড়িতে খেলা শেষের ঘন্টা প্রায় বেজে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত মাঠকর্মীদের অক্লান্ত চেষ্টায় দিনের খেলা মাঠে গড়ালো দ্বিতীয়বারের মতো। খেলার সময় নির্ধারণ করা হলো ১ ঘন্টা ১০ মিনিট। ওভারের হিসেবে ১৮.৩ ওভার।