সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বৃহস্পতিবার , ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | চ্যানেল খুলনা

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নয়াদিল্লি থেকে হাসানুর রহমান তানজির :: জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত, মহামারি এবং যুদ্ধের মধ্যে পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এই পৃথিবীতে মানুষ কেবল পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমেই টিকে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি-২০-এর ১৮তম শীর্ষ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জি-২০ গোষ্ঠীর সদস্য না হলেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু বাংলাদেশকেই ওই সম্মেলনে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে আয়োজক ভারত।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই শীর্ষ সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন আমাদের এই ধরিত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের একাধিক সংকট, কোভিড-১৯ মহামারি এবং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চ্যালেঞ্জ দ্বারা প্রভাবিত। এই চ্যালেঞ্জগুলি মানবজাতির অংশীদারিত্বমূলক ভবিষ্যৎ, শান্তি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে এক সম্প্রদায়ের রূপকল্পকে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সকলের জন্য অপরিহার্য করে তোলে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাস্তবতা হলো আমরা মানুষ পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমেই টিকে থাকতে পারি। অতএব, আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টা সবুজ ও টেকসই উন্নয়নের উপর জোর দিতে হবে। যার কারনে আমরা চক্রাকার অর্থনীতি পন্থা বেছে নিচ্ছি।

জি-২০ গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশ কাজ করতে প্রস্তুত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আমাদের এই ধরিত্রীকে শক্তিশালী করতে ও বাঁচাতে জি-২০ অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। একে অপরের এবং এই ধরিত্রীর যত্ন নেয়ার জন্য আমাদের নিজেদের পুনরায় অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে।

বক্তব্যে ঐতিহাসিক শহর নয়াদিল্লিতে জি-২০ লিডার্স সামিটে উপস্থিত হতে পেরে নিজের আনন্দের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই আমন্ত্রণ আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের গভীরতা ও উষ্ণতাকে প্রতিফলিত করে।

এবারে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ প্রতিপাদ্য গ্রহণ করায় নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এটি আমাদের এই গ্রহের সকল প্রাণীর মূল্যবোধ এবং উন্নত ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে কাজ করার অনিবার্যটাকে সমুন্নত করে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা না থাকলেও এর পরিণতির শিকার হিসেবে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। যদিও বাংলাদেশে প্রশমনের সুযোগ খুব সীমিত, আমরা প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন এবং এসডিজি অর্জনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জলবায়ু পরিবর্তনের বিপজ্জনক প্রভাব মোকাবেলায় অনেক রূপান্তরমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আশ্রয়হীন বা গৃহহীনদের জন্য ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্প শুরু করার কথা উল্লেখ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এই উদ্যোগের আওতায় চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৮ লাখ ২৯ হাজার ৬০৭ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। বাংলাদেশ ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার রোল মডেল’ হিসেবে সুপরিচিত।

কনফারেন্স অন ডিজাস্টার রেসিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার-এর জন্য নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগকে প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালের জুলাই মাসে এই প্ল্যাটফর্মে যোগ দেয়। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি স্থিতিস্থাপক এবং সমৃদ্ধ বদ্বীপ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা দীর্ঘমেয়াদি বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করেছি। এটি বাস্তবায়নের জন্য ২০৫০ সালের মধ্যে ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রয়োজন হবে। এ ব্যাপারে আমরা উন্নত দেশগুলোর সক্রিয় সমর্থন চাই। এর আগে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টার দিকে সম্মেলনস্থলে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্মেলনের জন্য বিশেষভাবে সাজানো কনভেনশন সেন্টার ‘ভারত মণ্ডপম’-এ উপস্থিত হন বিশ্বনেতারা।

এর আগে দুই দিনব্যাপী জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) নয়াদিল্লিতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান ভারতের কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতি দর্শনা জারদোশ।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) পর্দা নামবে জি-২০’র শীর্ষ সম্মেলনের। এরপর জি ২০ জোটের প্রেসিডেন্সি ব্রাজিলের কাছে হস্তান্তর করবেন নরেন্দ্র মোদি। চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে ব্রাজিলের জন্য তা কার্যকর হবে। আগামী ১৯তম শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করবে রিও ডি জেনেরো।

অতিথিদের আপ্যায়ন:

জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে আসা অতিথিদের আপ্যায়নে কোনও রকম ত্রুটি রাখছে না নয়াদিল্লি। খাঁটি ভারতীয় সব খাবার তাঁদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। সেই মেনুতে বার বার উঁকি দিচ্ছে মিলেট। দেশ-বিদেশের প্রধানদের সব দিকে থেকে যত্নে রাখার ব্যবস্থা যেমন হয়েছে, তেমন এ দেশের সংস্কৃতির ঝলকও দেওয়া হয়েছে। খাওয়া-দাওয়াতেও থাকছে ভারতীয় নানা রকম পদ। আর সে সবের মধ্যেই বিশেষভাবে জায়গা করে নিয়েছে মিলেট। শনিবার ও রবিবার দু’দিন ধরে চলবে এই সম্মেলন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ সোজ, ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির মতো রাষ্ট্রনেতারা হাজির হয়েছেন নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানের ভারত মণ্ডপম কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনে।

আয়োজক দেশ হিসাবে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সাজসাজ রব। ভারতীয়রা আতিথেয়তা করবে আর খাবারে নজর থাকবে না, তা কখনও হয় নাকি! জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে আসা অতিথিদের অনেকেই থাকছেন নয়াদিল্লির তাজমহল হোটেলে। অতিথিদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থায় কোনও রকম ত্রুটি রাখেননি সেখানকার রন্ধনশিল্পী অর্জুন সুন্দরারাজ। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে অতিথিদের সামনে ঠিক কী কী পরিবেশন করা হবে, সেই মেনু ঠিক করেছেন তিনিই। মেনুতে নজর কেড়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রিয় মিলেটের নানা রকম পদ।

অতিথিদের প্রাতরাশের মেনুতে থাকছে রাগির ইডলি, মিলেট প্যানকেক। দুপুর আর রাতর মেনুতে থাকছে ল্যাম্ব অ্যাট লিটল মিলেট স্যুপ সঙ্গে থাকছে পাল্‌ম হার্ট, চেরি টোম্যাটোস, পার্ল মিলেট অ্যান্ড মিক্স মেসক্লুন। এ ছাড়াও থাকছে মুর্গ বাদাম অ্যান্ড অমরনাথ কোর্মা, মিলেট নার্গিসি কোফতা। শুধু এখানেই শেষ নয়, মিষ্টির পদেও থাকছে মিলেটের ছোঁয়া। ওয়াইল্ড রাইস অ্যান্ড পার্ল মিলেট মুস, অরেঞ্জ কিনুয়া অ্যান্ড লিট্ল মিলেট ক্ষীর থাকছে স্পেশাল মেনুতে। মেনুতে বিদেশি অতিথিদের পছন্দকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় পদ পনির লবাবদার, সব্জ় কোরমার পাশাপাশি মেনুতে থাকছে লিওনিস পটেটো, পেনে অ্যারাবিয়াতার মতো একাধিক বিদেশি পদ।

আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক:

বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে দিল্লির ভারত মন্ডপম কনভেনশন সেন্টারের সভা কক্ষে এ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর নাতনি, থিম্যাটিক অ্যাম্বাসেডর, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং অটিজম এবং নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল উপস্থিত ছিলেন।

ভারতে হতে যাওয়া এবারের জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ৯টি দেশকে অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে দেশটি। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশগুলো হচ্ছে—মিসর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিংগাপুর, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ভারতের মধ্যে বিদ্যমান নানা সম্পর্কের ভিত্তিতে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছে।

https://channelkhulna.tv/

সারাদেশ আরও সংবাদ

যুবলীগ কর্মীকে গুলি করে হত্যা

ঢাকা মেডিকেল থেকে ‘ভুয়া নারী চিকিৎসক’ আটক

হাসিনার দুঃশাসনের কারণে কোন লোক আ’লীগের নাম বলার সাহস পাচ্ছে না: মাসুদ সাঈদী

জামায়াত ক্ষমতায় এলে দাবি আদায়ে সংগ্রাম করতে হবে না: শফিকুর

খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পেটানোর ৭দিন পর যুবলীগ নেতার মৃত্যু

প্রবাসীর স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ২

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।