বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ) হলো বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে এটি গঠিত হয় এবং এটি কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে অসহযোগ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
সম্প্রতি ‘বৈষম্যবিরোধী’ ও ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ের এখন আর অস্তিত্ব নেই, এমন মন্তব্য করেছেন সদ্যগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এরপর এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের দুই নেতা।
এই দুই নেতার বক্তব্য অনুযায়ী, এনসিপি ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ গঠনের পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতৃস্থানীয় প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ) বিলুপ্ত করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
নাহিদ ইসলাম শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী’ বা ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ের এখন আর অস্তিত্ব নেই। পরে এনসিপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে একই বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
নাহিদের বক্তব্য গণমাধ্যমে আসার পর বৈছাআর অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও মুখপাত্র উমামা ফাতেমা শুক্রবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে এক পোস্টে দাবি করেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটি বিলুপ্ত করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
উমামা ফাতেমা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশীদার ছাত্রদের সবাই নতুন রাজনৈতিক দল বা নতুন ছাত্রসংগঠনে যুক্ত হয়নি। অংশীদারদের আলোচনা ছাড়া প্ল্যাটফর্ম বিলুপ্ত হবে না। এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি অনুরোধ জানান।
উমামার মন্তব্যের ঘণ্টাখানেক পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি বক্তব্য আসে। বৈছাআর জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বিষয়ক বিশেষ সেলের সম্পাদক হাসান ইনাম এই পোস্টে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি গণ-অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম। জুলাই ও আগস্টে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষ এখানে সমবেত হয়েছিল। এই গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা সংরক্ষণ এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে এই প্ল্যাটফর্ম রাজনৈতিক বিভেদের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানই হবে এর প্রধান কর্মক্ষেত্র।