বেলারুশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে ইউরোপের দেশগুলো। বিমান অবতরণে বাধ্য করার পর সাংবাদিককে আটক করার ঘটনাকে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ বলে উল্লেখ করেছে তারা।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রিস থেকে লিথুয়ানিয়াগামী রায়ানএয়ারের একটি উড়োজাহাজকে বেলারুশের নামতে বাধ্য করা হয়। এরপর ওই সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান দিয়ে উড়োজাহাজটিকে মিনস্কে অবতরণ করানো হয়। বলা হচ্ছিল, ওই ফ্লাইটে বোমা আছে। কিন্তু পরে কোনো বোমা পাওয়া যায়নি।
উড়োজাহাজে ছিলেন নেক্সটা গ্রুপের সাবেক সম্পাদক রোমান প্রোটাসেভিচ। তাকে আটকের পর বিমানটিকে যাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়। শিডিউলের সাত ঘণ্টা পর বিমানটি লিথুয়ানিয়ায় রাজধানী ভিলনিউসে অবতরণ করে।
যাত্রীরা জানিয়েছেন, মিনস্কে অবতরণ প্রসঙ্গে তাদের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। একজন বলেছিলেন, প্রোটাসেভিচকে খুবই ভীত দেখাচ্ছিল। আমি সরাসরি তার চোখের দিকে তাকিয়েছিলাম এবং এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আরেকজন যাত্রী বলেন, মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন বলে জানান এ সাংবাদিক।
রায়ানএয়ার বিবৃতিতে জানায়, লিথুয়ানিয়ার সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছতেই বেলারুশের কর্তৃপক্ষ বোমার হুমকির কথা উল্লেখ করে মিনস্ক এয়ারপোর্টে অবতরণ করতে হবে। যদিও মিনস্কের চেয়ে ভিলনিউস ছিল কাছাকাছি দূরত্বে।
এ ঘটনায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ন্যাটোর হস্তপেক্ষ চেয়েছে প্রোটাসেভিচের সমর্থকেরা। বিমানবন্দরের বাইরে তাদের অনেককে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।
এরইমধ্যে এ ঘটনায় গুরুতর পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাজ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব। প্রতিবাদ জানিয়েছেন বেলারুশের নির্বাসিত বিরোধী নেতা স্বেতলানা তিখানোভস্কায়ান।
লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গীতানাস নওসেদা বলেন, এ ঘটনা অভাবনীয়, বেলারুশ কর্তৃপক্ষ মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান দিয়ে ভিলনিউসগামী বিমানকে অবতরণ করতে বাধ্য করেছে। একে ‘বিমান দস্যুতা’ উল্লেখ করে প্রোটাসেভিচের শিগগিরই মুক্তি দাবি করেন।
১৯৯৪ সাল থেকে বেলারুশে ক্ষমতায় আছেন আলেজান্ডার লুকাশেঙ্কো। গত আগস্টের বিতর্কিত নির্বাচনের পর বিরোধী মত দমনে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি। অনেকে আটক আছেন কারাগারে, তিখানোভস্কায়ানের মতো বিরোধী নেতারা পালিয়ে গেছেন বিদেশে।