দীর্ঘ সাত বছর পর ‘নবাব এলএলবি’ নামের সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করেন দেশীয় সিনেমার শীর্ষ নায়ক শাকিব খান ও মাহিয়া মাহি। শীর্ষ এই দুই তারকার সিনেমাটি নিয়ে তাদের ভক্ত-অনুরাগীদের ছিল ব্যাপক আকাঙ্খা।
কবে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি- এমন অপেক্ষায় ছিলেন অনেকেই! কিন্তু শুরু থেকেই সাতপাঁচ করে আসছিলেন পরিচালক অনন্য মামুন। একাধিকবার শিল্পীদের শিডিউল নিয়ে শুটিং করেননি। মাহি সন্দিহান ছিলেন আদৌ সিনেমাটি হবে কি না। পরে শুটিং শুরু হলেও গানের শুটিং নিয়ে বাঁধে জটিলতা।
শুরুর দিকে ইউরোপে গানের শুটিং হবে জানালেও পরে বলেন ভিসা জটিলতার কারণে মালদ্বীপ করবেন। এরপর স্পট বদলে সিলেটে শুটিং করার সিদ্ধান্ত নেন মামুন। শেষ পর্যন্ত শুটিং হয়েছে ঢাকার একটি পাঁচতারা হোটেলে। এত টালবাহানার পরও ট্রেলার প্রকাশের পর শাকিব-মাহি ভক্তরা সিনেমাটি দেখার আগ্রহ দেখিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় আই থিয়েটার অ্যাপে মুক্তি পায় ‘নবাব এলএলবি’। অগ্রিম ফি দিয়ে আগ্রহ নিয়ে দেখতে বসে হতাশ হয় অনেক দর্শক। সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া হয়েছে অর্ধেক!
পরিচালক জানালেন, বাকি অর্ধেক মুক্তি দেওয়া হবে সামনের মাসে। এই খবরে ভক্তদের পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিনেমার নায়ক শাকিব খানও। তিনি বলেন, ‘এটা সরাসরি প্রতারণা। সিনেমা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রও বলা যায়। আমি ভাবতে পারিনি মামুন এমন কাজ করবে। দর্শক ৯৯ টাকা ফি দিয়ে অর্ধেক ছবি দেখবে কেন! তা ছাড়া এটাকে মামুন পার্ট-১ বলে দাবি করছে কিভাবে? আমি তো জানি, কোনোভাবেই এটা পার্ট-১ বা পার্ট-২ না। পুরো একটা সিনেমার অর্ধেক সে মুক্তি দিয়েছে। এটা অন্যায়। এখন দর্শক যদি ভোক্তাধিকারে মামলা করে, মামুনের কোনো অজুহাতই কাজে লাগবে না। তাকে জরিমানা দিতে হবে। ’
মাহি বলেন, ‘এই সিনেমায় অভিনয় করাটাই আমার ভুল হয়েছে। শুরুতে যখন বারবার শিডিউল নিয়ে ঘাপলা করেছিল, তখনই সরে দাঁড়ানো উচিত ছিল। আমাকে গল্প শুনিয়েছে এক রকম, শুটিং করেছে আরেকভাবে। মুক্তির পর দেখা গেল অন্যরকম। যারা আমাকে ফোন করেছেন, প্রত্যেককে বলেছি, এই সিনেমা আমার না। আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। ’
অবশ্য পরিচালক অনন্য মামুন বলছেন অন্যকথা। তিনি জানিয়েছেন, এটা তার ‘ব্যাবসায়িক পলিসি’। সিনেমার অভিনেতা শাকিব খানের দিকেও অভিযোগের তীর ছুড়েছেন তিনি। বলেন, ‘সিনেমা ধ্বংসের শুরু সেদিন, যেদিন ‘নবাব এলএলবি’র ট্রেলার প্রকাশ পায় এবং তা নিজের পেজে শেয়ার করেননি শাকিব খান। অথচ, ট্রেলারটি তার অপছন্দের লোকেরাও শেয়ার করেছে। সিনেমার স্থিরচিত্র ব্যবহার করছেন নিয়মিত, অথচ সিনেমার নাম তিনি ব্যবহার করেন না। ’
মামুনের অভিযোগ-অনুযোগের ধার ধারে না দর্শক। তারা নির্মাতার এই পলিসিকে নেহায়েত প্রতারণা বলে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক পোস্ট দিচ্ছে। মিফতাহ উদ্দিন নামের এক দর্শক লিখেছেন, ‘দর্শকের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে চাইলে, তা করতে দেবো না। একটা সিনেমার বাকি অংশ দেখার জন্য কেউ এত দিন অপেক্ষা করবে না। প্রয়োজনে ভোক্তাধিকার আইনে অভিযোগ করবো। ’