চট্টগ্রাম থেকে রোহিঙ্গাদের একটি দলকে নেওয়া হচ্ছে নোয়াখালীর ভাসানচরে। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে চারটি জাহাজে ভাসানচরের উদ্দেশে যাচ্ছেন এক হাজার ৭৭৮ জন রোহিঙ্গা। এই নিয়ে তৃতীয় দফায় কক্সবাজার থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রক্রিয়া চলছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) ৩৮টি বাসে করে ১ হাজার ৭৮৭ জনকে চট্টগ্রামে আনা হয়। শুক্রবার আরও ১ হাজার ৩০০ জনকে চট্টগ্রামে আনার কথা রয়েছে। সেখান থেকে তাদের নৌবাহিনীর জাহাজে করে নোয়াখালীর ভাসানচরে পাঠানো হবে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার মিলিয়ে সেখানে ৩ হাজার রোহিঙ্গা পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গার তালিকা বড় হওয়ায় এবার দুই দিন পাঠানোর কাজ চলছে।
এর আগে ২০২০ সালের ৪ ও ২৯ ডিসেম্বর দুই দফায় ৩ হাজার ৪৪৬ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।ভাসানচরের আশ্রয়শিবিরে মোট ১ লাখ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) স্থানান্তরের জন্য কয়েক শ জনকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে আনা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে তাদের চট্টগ্রামে আনা হয়।
ভাসানচরে২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা শুরু হলে পরের কয়েক মাসে অন্তত ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে আসে আরও কয়েক লাখ। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ।
যা রয়েছে ভাসানচরে
১২০টি ক্লাস্টার গ্রাম নিয়ে তৈরি ভাসান চর ১ লাখ রোহিঙ্গার আবাসনের জন্য প্রস্তুত। বিদ্যুৎ ও সোলার প্যানেল, বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট এবং মোবাইল ফোনের টাওয়ারসহ ভবনগুলো যে কাউকে অবাক করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বাড়িগুলো মাটির চার ফুট উপরে কংক্রিটের ব্লক দিয়ে তৈরি।
পুরো আবাসন সাইটটির নিরাপত্তায় রয়েছে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বন্যা সুরক্ষা বাঁধ। এছাড়াও রয়েছে চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক, দুটি ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, দুটি স্কুল ও তিনটি মসজিদ।
জাতিসংঘ নির্ধারিত আকারেরও বড় মাথা গোঁজার ঠাঁই এই দ্বীপ। সৌরবিদ্যুৎ জোগাবে আলো আর পানি। রান্নায় সাশ্রয়ী আর পরিবেশবান্ধব চুলা। শিশুদের জন্য স্কুল, খেলার মাঠ। কক্সবাজারের ক্যাম্পের তুলনায় এমন অন্তত ১৬টির বেশি সুবিধা নিয়ে ১ লাখ রোহিঙ্গা শরনার্থীর জন্য অপেক্ষা করছে ভাসানচর, যাদের মধ্যে ১৬৪২ জন শুক্রবার পৌছালেন।