তরিকুল ইসলামঃ খুলনার রূপসায় ভৈরব ও আঠারোবাকী নদীর ১৭ কিলোমিটার খনন কাজ শেষ হলেও ভৈরবে দেওয়া বাঁধ কেঁটে জোয়ার-ভাটা উম্মুক্ত না করায় রূপসা ও তেরখাদা উপজেলার তিন বিল জলাবদ্ধ রয়েছে। অপরদিকে নদীর জোয়ার-ভাটা ওই বাঁধে এসে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বাঁধের বাইরে ভৈরবের প্রায় ৫ কিলোমিটারে নতুন করে চর জেগে উঠছে। পলি পড়ে উঁচু হচ্ছে নদীর তলদেশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রূপসা উপজেলার ভৈরব নদের সাড়ে ৫ কিলোমিটারসহ আঠারোবাকী নদী থেকে তেরখাদার ছাগলাদাহ স্লুইস গেট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার নদী খনন কাজ ২০১৫ সালে শুরু হয়। পানি উন্নয়নবোর্ডের এ কাজ তিন বছর মেয়াদে দেয়া হয় এআরকে গ্রুপ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। সুষ্ঠুভাবে কাজ পরিচালনার জন্য তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয় তোফায়েল গ্রুপকে। তিন বছরের স্থলে খনন কাজ শেষ হতে লাগে পাঁচ বছর। খননকৃত নদীটি বিআরএম এর আওতাভূক্ত থাকায় (জোয়ার-ভাটা চলমান) গত দুই বছর আগে খনন কাজের স্বার্থে ভৈরব নদের রূপসা উপজেলার শ্রীরামপুর অংশে বাঁধ দিয়ে জোয়ার-ভাটা বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে নদী সংলগ্ন পদ্ম বিল, নর্নিয়া বিল ও পুটিমারী বিলে শুরু হয় স্থায়ী জলাবদ্ধতা। একারণে বিশাল এ তিন বিলের প্রায় লক্ষাধিক একর জমি অনাবাদি রয়েছে এ দুই বছর। এদিকে খনন কাজ শেষ করে গত সেপ্টেম্বরে তদারকি প্রতিষ্ঠান তোফায়েল গ্রুপকে কাজ বুঝে দিলেও অজ্ঞাত কারণে এআরকে প্রতিষ্ঠান ভৈরবে দেয়া বাঁধ কেটে জোয়ার-ভাটা উম্মুক্ত করছেনা। ফলে ওই তিন বিলের পানি নিস্কাশন না হওয়ায় কৃষিজীবীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অপরদিকে ভৈরবের জোয়ার-ভাটা শ্রীরামপুর বাঁধে এসে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ওই বাঁধ থেকে মাইঝের খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় ৫কিলোমিটারে নতুন করে চর জেগে উঠেছে। পলি জমে উঁচু হচ্ছে নদীর তলদেশ। এব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে নতুন করে চর জেগে ওঠা ভৈরবের ওই পাঁচ কিলোমিটার আবারো খনন করা লাগবে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এআরকে প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মাহমুদ হোসেন বলেন, খনন কাজ শেষ হলেও নদী সংলগ্ন বিলের পানি নিস্কাশনের খালগুলির মুখ বন্ধ করা হচ্ছে। তা না হলে জোয়ারের পানি ওইসব খাল দিয়ে বিলে উঠে ফসলের ক্ষতি হবে।
এদিকে ওইসব বিলের চাষীরা জানিয়েছেন, জোয়ার-ভাটা শুরু হলে বিলে পানি ওঠার চেয়ে নেমে যাবে বেশি। তাছাড়া এখন নদীতে পানির খুব একটা চাপ নেই। নেই প্লাবনের কোন আশংকা। এছাড়া অধিকাংশ খালের মুখে স্লুইচগেট রয়েছে।
এব্যাপারে রূপসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন আক্তার বলেন, কাজ শেষ হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে দ্রুত বাঁধ অপসারণের ব্যবস্তা গ্রহণ করা হবে।