তৃতীয় বিশ্বের মতো দেশে নির্বাচনে সহিংসতা কিছু ঘটনা ঘটে মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, সে হিসাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সহিংসতা কমই হয়েছে। দুটি কেন্দ্র ছাড়া সবখানে ভালো ও সুন্দর নির্বাচন হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বুধবার ভোট শেষে সন্ধ্যা ৬টার পর নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও ভোটার উপস্থিতি কমছে।
সচিব বলেন, গণমাধ্যমে আমরা যে নির্বাচনের চিত্র দেখেছি, আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে রিপোর্ট পেয়েছি- তাতে বলব ভালো নির্বাচন হয়েছে। সহিংসতা আমাদের তৃতীয় বিশ্বের মতো দেশে এ ধরনের নির্বাচনে কিছু ঘটনা ঘটে। সে হিসাবে আমি বলব- বরং কমই হয়েছে। মাত্র দু’তিনটি কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের দুষ্কৃতকারীরা সবসময় এ কাজ করে।
নির্বাচনে সহিংসতার বিষয়ে সচিব বলেন, শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য ২০ হাজার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দেওয়া হয়েছে। ভয়ংকর পরিস্থিতি কোথায় হলো? যেখানে ৭৩৫ কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র দুইটা কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হয়েছে। ইভিএম ভাংচুর না করলে সেখানেও নির্বাচন হতো। ভোট নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, দুটো কেন্দ্রে কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক, যারা ইভিএমে ভোট হোক তা চায় না তারাই আক্রমণ চালিয়েছে ও ইভিএম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভোট স্থগিত করা হয়। ইভিএমে ভোট হলে অনেকে মনে করে এখানে জাল ভোট দেওয়া যাবে না, তারা সাধারণত এ ধরনের আক্রমণ করে। বাকিগুলোতে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ভোট হয়েছে। ভোট দিয়ে ভোটাররা বাড়ি গেছেন। অধিকাংশ কেন্দ্রের ফলও হয়ে গেছে।
ভোট নিয়ে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে সচিব বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোগ দেখবে রিটার্নিং অফিসার। তারপরও যেসব অভিযোগ কমিশনে পাঠাবে তা কমিশনে উপস্থাপন করব। কমিশন বললে তখন ব্যবস্থা নেব। আওয়ামী লীগের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, যে কোনো অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে বলা গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোথায় কীভাবে কে করেছে তা উল্লেখ থাকতে হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (চসিক) ভোটার উপস্থিতি প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেন, ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক একটু কম। শুধু চট্টগ্রামের নয়, যে কেনো বড় শহরে ভাসমান লোক থাকায় উপস্থিতি কম হয়। চট্টগ্রামে আমরা আরেকটু বেশি আশা করেছিলাম। তারচেয়ে একটু কমই হয়েছে। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ভোটারদের অনীহা কিছু বলা যায়। এখনকার নাগরিকদের কেন যেন রাষ্ট্রের প্রতি যে দায়িত্ব আছে, ভোট যে তার অধিকার- এটা তারা মনে করছেন না। কষ্ট করে ভোট দেব, কেন যাব অন্যকে ভোট দেব- এতে লাভ কী আমার; এ ধরনের একটা মনমানসিকতা হয়ে গেছে।
আমেরিকার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বে বেশিরভাগ দেশে ভোটের ক্ষেত্রে এমন হয়। আমেরিকার ক্ষেত্রে দেখবেন- এত উন্নত সব দিক দিয়ে উন্নত তারা; কিন্তু ভোটের ক্ষেত্রে তারা ভোট দিতে যায় না বেশিরভাগ মানুষ। তো আমাদের দেশেও অনেকটা ওই রকম, উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ লক্ষণ দেখা দিয়েছে। মানসিকতা বদল হয়েছে। অন্যের জন্য কেন ভোট দেব, কষ্ট করে ভোট দেব কেন।