বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এড. নিতাই রায় চৌধুরী বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক। শহীদ জিয়ার ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করার জন্য দেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং হানাদার মুক্ত করে এ দেশকে স্বাধীন করেছিল। মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকীতে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে, এদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী জনগনকে সাথে নিয়ে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি ভোট বর্জন করে এ দেশের মানুষ সরকারের মুখে কলঙ্ক লেপে দিয়েছে। বিশ্ববাসী এ সরকারের নির্বাচনকে নাটক ও প্রহসন বলেছে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিকাল তিনটায় খুলনা প্রেসক্লাবের লিয়াকত আলী মিলনায়তনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এঁর ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ধারণা প্রবর্তন করে দেশের অর্থনীতির ভিত গড়ে দেওয়া, প্রতিরক্ষার জন্য শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন করা, খাল খনন, গ্রাম সরকার, কৃষির উন্নয়ন, গণশিক্ষা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমের রাষ্ট্রের একটি গণচরিত্র গঠন করা, জনজীবনে নিয়মানুবর্তিতা ফিরিয়ে আনা, বেকারত্ব হ্রাস করা, শিল্পকারখানায় উৎপাদনের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, মেয়েদের স্কুল ফুটবল শুরু করা, জাতীয় ক্রিকেট দল গঠন করা, চলচ্চিত্রে অনুদান প্রথা চালু করা, একুশে ও স্বাধীনতা পদক প্রবর্তন করেছিলেন মহানরাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান। আজ দেশের ক্লান্তিলগ্নে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী পালন করছি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের যে আদর্শ সেটি নষ্ট করা হচ্ছে, তার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র আজ নেই, সেটিকে মেরে ফেলা হয়েছে, গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করা এখন সময়ের দাবি।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু বলেন, ২৫ মার্চ রাতে যখন বাংলাদেশের ৭ কোটি মানুষের ওপর পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে তখন জিয়াউর রহমান এই হানাদার বাহিনীর হামলার প্রতিরোধ করেছিলেন। সেদিন বর্তমান সরকারের কোনো ব্যক্তি প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করেনি। তারা পালিয়ে গিয়েছিল পাশের দেশে। আমরা মানুষের সেবা করার জন্য রাজনীতিতে নেমেছি। এ দেশের মানুষকে আমরা বলেছি, ক্ষমতার জন্য আমরা রাজনীতি করতে আসিনি। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য রাজনীতি করি। বিএনপি লোগী বৈঠার রাজনীতি করে না। বিএনপি ভদ্র মানুষের দল। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নিরস্ত্র মানুষদের নিয়ে এ দেশের সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব ইনশাআল্লাহ।
মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক স ম আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক শেখ সাদীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী এড. গাজী আব্দুল বারী, বেগম রেহানা ঈসা, কাজী মাহমুদ আলী, আবুল কালাম জিয়া, অধ্যাপক মনিরুল হাসান বাবুল, আশরাফুল হক খান নান্নু, এনামুল হক সজল, শেখ জাহিদুল ইসলাম, মো. মুশিদ কামাল, শেখ ইমাম হোসেন, হাবীবুর রহমান বিশ^াস, আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস, শাহিনুল ইসলাম পাখি, আরিফ ইমতিয়াজ খান তুহিন, এড. তৌহিদুর রহমান তুষার, কেএম শহিদুল আলম, আহসান উল্লহি বুলবুল, এড. মোহাম্মাদ আলী বাবু, নাসির খান, মিজানুর রহমান মিলটন, মজিবর রহমান, শফিকুল ইসলাম শফি, আজিজা খান এলিজা, সাইফুল ইসলাম সেন্টু, আজাদ আমীন, আবু সাঈদ শেখ, মেহেদী হাসান মিন্টু, এড. কানিজ ফাতেমা আমিন, আক্তারুজ্জামান সজীব, নিঘাত সীমা, সরদার আব্দুল মালেক, মো. আব্দুল মান্নান খান, মোজাফফর হোসেন, মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন, মনিরুজ্জামান লেলিন, বাবু উজ্জ্বল কুমার সাহা, মোল্লা কবির হোসেন, মেহেদী হাসান মিন্টু, আতাউর রহমান রনু, খান ইসমাইল হোসেন, সেতারা সুলতানা, মোহাম্মদ জাবির আলী, মো. আনোয়ার হোসেন আনু, মো আজিজুল ইসলাম, রেহেনা ইসলাম, কানিজ ফাতেমা নূপুর প্রমূখ। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এঁর আত্মার মাগফেরাত কামনায়, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় এবং আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনা বিশেষ দোয়া করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় নিভৃত পল্লী বাগবাড়ীর এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জিয়াউর রহমান। দূরদর্শী ও জনপ্রিয় রাষ্ট্রনায়ক, অসাধারণ দেশপ্রেমিক, অসম সাহসী ও সহজ-সরল ব্যক্তিত্বের প্রতীক হিসেবে জিয়াউর রহমান ইতিহাসে অবিস্মরণীয়। ১৯৮১ সালের ৩০ মে কতিপয় বিপথগামী সামরিক কর্মকর্তার হাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে শাহাদতবরণ করেন দেশপ্রেমিক এই রাষ্ট্রনায়ক।