আরিফুল হক চৌধুরীঃ করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যস্ত গোটা দেশ। বিশেষ করে কলারোয়ায় দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ একাবারে নাকাল। সরকারী ত্রাণের পাশাপাশি দূর্যোগের এই কঠিন সময়ে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় দেশের নামিদামি প্রায় চল্লিশ টির মত এনজিও, প্রভাবশালী সমাজসেবক, সমাজে বিত্তশালী হিসেবে পরিচিত, বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত ও নতুন করে জনপ্রতিনিধি হতে আগ্রহীদের এই মহা দূর্যোগে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর কোনো মানবিক উদ্যোগ চোখে পড়ার মত নেই। এদের মতোই মাঠে নেই অনেক জনপ্রতিনিধিরাও।
কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লালটু নিজ উদ্যোগে সমাজের কিছু বিত্তশালীদেরকে সাথে নিয়ে উপজেলার এক হাজার পরিবারের বাড়ীতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া দুই একজন জনপ্রতিনিধিকে কিছু খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করতে দেখা গেছে । তবে সেটা চোখে পড়ার মত না। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে কলারোয়া উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে প্রায় ১০০ জন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ও হাজার খানেক মেম্বর প্রার্থী আছে। তাছাড়া কলারোয়া পৌরসভায় সম্ভাব্য ৬ জন মেয়র প্রার্থী ও ৫০ জন কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন। তাদের মধ্যে দুই এক জন বাদে আর কেউ অসহায় মানুষের পাশে নেই। এই সমস্ত সম্ভাব্য প্রার্থীরা যদি যার যার এলাকায় সরকারের পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে গরীব অসহায়দের তালিকা করে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে তাহলে কেউ আর অভূক্ত থাকবে বলে মনে হয় না।
দেশের এই মহাদূর্যোগে মানুষের কল্যাণে মাঠে কোনো তৎপরাতাই নেই বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থাগুলোর(এনজিওর)। শুধু ব্র্যাক রয়েছে মাঠে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য। ছোট-বড় আর কোন এনজিওকেই দেখা যাচ্ছে না। কলারোয়ায় দেশের অনেক বড় বড় এনজিও আছে যাদের আর্থিক অবস্থাও অনেক ভাল। কিন্তু মানবতার সেবায় নিজেদেরকে কাজে না লাগিয়ে যেন হাত পা গুটিয়ে ঘরে বসে আছে। অসহায় গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না তারা কেউ। তারা শুধু নিতে এসেছে এখানকার জনগণের কাছের থেকে, কিছু দিতে আসেনি।
কলারোয়ায় অনেক বড় বড় বিত্তশালী আছেন ও অনেক জনপ্রতিনিধিও আছেন যারা এখনও মাঠে অনুপস্থিত। এ বিষয়ে বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব এড.কাজী আব্দুল্লাহ-আল হাবীবের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কলারোয়ায় অনেক কোটিপতি লোক আছে। এদের কলারোয়াবাসীর প্রতি কোন ভালবাসা নেই, মানবতাবোধও নেই। এভাবে কোটিপতি, বিত্তশালীরা করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। তিনি বলেন এদের ভিতর মানবিকতার অভাব রয়েছে। তাই অন্যদের প্রতি সহনাভূতি নেই তথাকথিত এই বিত্তবানদের। আমরা সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পারছি ছাত্ররা টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে তারা অসহায়দের মাঝে ত্রান দিচ্ছে। অথচ আমাদের দেশের এনজিও গুলো ক্ষুদ্র লোনের নামে চড়া হারে সুদ নিয়ে তাদের ব্যবসাকে লাভবান করছেন কিন্তু যাদের টাকা নিয়ে লাভবান হচ্ছেন তাদের বিপদের দিনে তারা তাদের পাশে নেই।
সমাজের বিত্তশালী লোক গুলো হাত পা গুটিয়ে ঘরে বসে আছেন। যাদের সামর্থ্য বেশী তারা বেশীর ভাগই এখন কলারোয়ার অসহায় মানুষের পাশে নেই। তবে এটা কিন্তু একটা সুযোগও কলারোয়ার মানুষের জন্য। কারণ আমরা চিনতে পারছি আসলে কারা দেশপ্রেমিক আরা কারা স্বার্থপর।