চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃস্বাধীনতা যুদ্ধে নড়াইলে মাটি চাপা দেওয়া ৭ শহীদকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির দাবিতে মানববন্ধন করেছে তাদের পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে শহরের রুপগঞ্জ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেতরে গণকবরের পাশে এ মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত আরা, হোসনে আরা কায়জার, গোলজার হোসেন টুটুল, প্রভাষক তরফদার রেজাউল ইসলামসহ আরও অনেকে।
এ সময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত আরা বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে আমার ভাই মকবুল হোসেন শিকদারসহ ৮ জনকে হাত-পা বেঁধে পাক হানাদার বাহিনী গর্তে নামিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অভ্যন্তরে মাটি চাপা দেয়। এদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম তরফদার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেও বাকি ৭ জন আজও স্বীকৃতি পাননি। সকল শহীদদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
কায়জার রহমানের স্ত্রী হোসনে আরা কায়জার বলেন, আমার স্বামীকে রাজাকার সুলাইমানের নেতৃত্বে অন্যান্য রাজাকাররা তুলারামপুর থেকে ১৭ জুলাই ধরে এনে নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন চালায়। তিন দিন নির্যাতনের পর ২০ জুলাই ভোরে তাকে হত্যা করে পাউবোর ভেতরে মাটি চাপা দেয়। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও আমার স্বামীকে আজও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
শহীদ পরিবারের সদস্য সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ১৭ জুলাই ভোরে তৎকালীন নড়াইল মহাকুমা পিস কমিটির চেয়ারম্যান কুখ্যাত রাজাকার সোলাইমানের নেতৃত্বে সদর উপজেলার তুলারামপুর গ্রামের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান তরফদার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুস ছালাম তরফদার, তুলারামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলতাফ হোসেন তরফদার, কালিয়ার তহশিলদার রফিকুল ইসলাম তরফদার, তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা মাহাতাব উদ্দিন তরফদার, মকবুল হোসেন শিকদার, মো. কায়জার রহমান এবং মোকাম মোল্যাকে চোখ বেঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডে অবস্থিত পাক বাহিনীর ক্যাম্পে এনে নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতন শেষে তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে ক্যাম্পের পাশে মাটিচাপা দেওয়া হয়।