স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সরকারি চাকরিতে যেতে হলে প্রত্যেককে ডোপ টেস্টের আওতায় আসতে হবে। এতে কেউ পজিটিভ হলে তিনি সরকারি চাকরি পাবেন না। এ ধরনের একটি কার্যক্রম দ্রুতই শুরু হতে যাচ্ছে। চাকরিতে আছেন এমন কারও ডোপ টেস্টের ফল পজিটিভ হলে, তার বিরুদ্ধেও অ্যাকশন নিচ্ছি।’
আজ শুক্রবার (২৫ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আলোচনাসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী অন্তর্জাতিক দিবস ২০২১ উপলক্ষে আলোচনা সভা আয়োজন করে মাদকদ্রব্য নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস)।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি চাকরি পেতে প্রত্যেককে ডোপ টেস্টের আওতায় আনার অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চাকরিরতদেরও ডোপ টেস্টের আওতায় আনছি। বিশেষ করে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীতে যারা আছেন তাদের ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। ডোপ টেস্টে ফল পজিটিভ এলেই অ্যাকশন নিচ্ছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মাদক একটি সামগ্রিক নেশায় পরিণত হয়েছে। আমরা ২০৩০ ও ২০৪১ সালের যে রূপকল্প করছি মাদক নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তা বাস্তবায়ন হবে না। এই ভয়ংকর নেশা থেকে বাঁচানোর জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। আমরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে ঢেলে সাজিয়েছি। আগে যেখানে ৩/৪টি জেলা নিয়ে ছোট্ট একটি নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অফিস থাকত, এখন সেখানে প্রত্যেকটি জেলায় অফিস রয়েছে। আমরা লোকবলও বাড়িয়েছি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনও আমরা ঢেলে সাজিয়েছি।’
আলোচনায় মূল প্রবন্ধে মানসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ না। মাদকদ্রব্যের অবৈধ প্রবেশের ফলে যুবসমাজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ৪৯ ভাগ মানুষ বয়সে তরুণ। মাদক ব্যবসায়ীরা এই কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠীকে ভোক্তা হিসেবে পেতে চায়। গবেষকরা আসক্তদের শতকরা ৮০ ভাগ কিশোর-তরুণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে মাদকাসক্তদের মধ্যে শতকরা ৯৮ ভাগই ধূমপায়ী এবং তার মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগই বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও খুনসহ রাজধানীতে সংঘটিত অধিকাংশ অপরাধের সঙ্গেই মাদকাসক্তির সম্পর্ক রয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু বলেন, ‘মাদক নির্ভরশীল ব্যক্তিকে সঠিক ভাবে পরিচর্যা করতে না পারলে যেকোনো সময় তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। মাদকাসক্তি চিকিৎসায় ব্যক্তির ও তার পরিবারের সার্বিক সহযোগিতা দরকার। সবার সম্মিলিত মাদকাসক্তদের ভালো করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। মাদক নির্ভরশীল ব্যক্তির চিকিৎসার সকল পর্যায়ে পরিবারের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা প্রয়োজন।’