করোনাভাইরাসের নামে সরকার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে করোনার অজুহাতে মাদ্রাসা বা ধর্মীয় মাহফিল বন্ধের চেষ্টা হলে হেফাজতে ইসলাম মেনে নেবে না। এসব বন্ধ হলে হেফাজত ইসলাম আবার মাঠে নামবে। এই হুঁশিয়ারি এসেছে সংগঠনটির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে। এছাড়া ২৬-২৮ মার্চ হেফাজতের বিক্ষোভের সময় ঢাকা,চট্টগ্রাম,ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জে সংগঠিত তাণ্ডবের জন্য আওয়ামী লীকেও দায়ী করেছে ধর্মভিত্তিক কট্টরপন্থি এই সংগঠনটি।
শুক্রবার (২ এপ্রিল) জুমার নামাজের পররাজধানীর বায়তুল মোকাররমে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি করে হেফাজতে ইসলাম। এই বিক্ষোভ সমাবেশ ঘিরে সতর্ক অবস্থানে থাকে পুলিশ। মসজিদসহ আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।
নামাজ শেষ হওয়ার পর পরই তারা বিক্ষোভে অংশ নেয়। তবে বিক্ষোভ সমাবেশের বাইরে সড়কে আসা-যাওয়ার পথে তারা কোনো মিছিল বা অবস্থান করবে না বলে জানানো হয়। সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সরকার জনসমাগম সীমিত করে যে ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো এবার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বিশেষ পরিস্থিতিতে কওমি মাদ্রাসা চালু রাখার সুযোগ দেয় সরকার। তবে এবার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। ১৮ দফা নির্দেশনার মধ্যে অন্যতম হলো সব ধরনের ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক সমাবেশ সীমিত রাখা, মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রার্থনা করা।
সমাবেশে সংগঠনের ঢাকা মহানগরী সভাপতি জুনায়েদ আল হাবিব বলে, ‘মোবাইলে কল করতে যাবেন করোনা, বাসে উঠতে যাবেন করোনা। করোনার অজুহাতে গত বছর আমাদের ঠিকমতো তারাবি পড়তে দেয়া হয় নাই। করোনা দিয়েছেন আল্লাহ, এর জন্য আল্লাহর কাছে বাধা চাইব। এর জন্য নামাজে বাধা দেয়া যাবে না।’
মাদ্রাসা বন্ধ করা যাবে না উল্লেখ করে হেফাজত নেতা বলেন, ‘আজকে করোনার অজুহাত দেখিয়ে মাদ্রাসাগুলো বন্ধের পাঁয়তারা চলছে। মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে কওমি মাদ্রাসা বন্ধের কোনো কথা নাই। পরিষ্কার ভাষায় বলবো যে ১৮ টি শর্ত দেয়া হয়েছে এর মধ্যে কওমি মাদ্রাসার কথা নাই। কিন্তু কিছু অতি উৎসাহী প্রশাসন মাদ্রাসাগুলো বন্ধের পাঁয়তারা করছে।’
ওয়াজ মাহফিল বন্ধের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন ইসলামী সম্মেলন তারাবির নামাজ, মাদ্রাসা মসজিদে নামাজ বন্ধের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না। করলে হেফাজত ইসলাম আবার মাঠে নামবে।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন,’২৬ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের ২০ জনকে,শহীদ করেছে,সারাদেশে এখন আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে,গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলন হবে বলে তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার দেন তিনি।
এ সময় হেফাজতের সংবাদ বর্জনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন মামুনুল। তার দাবি, গণমাধ্যম ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম’ আছে জানিয়ে প্রয়োজনে মিডিয়াকে বয়কটের কথাও বলেন তিনি।