অনলাইন ডেস্কঃনগরীর বয়রাস্থ খুলনা ইসলামীয়া কলেজের শিক্ষকদের টিভি দেখা কক্ষে ৭ বছর বয়সের দু’জন শিশুকে যৌন নিপীড়ন ও এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করায় ওই কলেজের অস্থায়ী চাকুরিটি হারিয়েছেন এক মা। গত ১৮ জুন বিকেলে ৭ বছর বয়সের দুইজন শিশু কন্যাকে চকলেট দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই কলেজের শিক্ষকদের টিভি দেখা কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে নৈশ প্রহরী মোঃ মহিবুল্লাহ (৫০)।
এ বিষয়ে খুলনা ইসলামীয়া কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আওছাফুর রহমান বলেন, কলেজের অফিস সহায়ক মুক্তার পরিবর্তে ডিউটি করতো ওই ধর্ষিতা শিশুর মা। আমি মুক্তাকে বলেছি ওই শিশুর মা যাতে আর কলেজে না আসে। তবে শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত এ পরিবারের সামান্য রোজগারের পথ বন্ধ করে দেয়ার কারণ কি? সে বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিন বছর যাবৎ ওই কলেজের অফিস সহায়কের কাজে নিয়োজিত থাকা শিশুটির মা কোন নির্ধারিত বেতন পেত না। বছরের দু’টি ঈদে শিক্ষকরা মিলে তাকে বকশিস দিতো। এছাড়া কলেজে বোর্ড পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে সেখানেও ডিউটি করতো ওই নারী। এভাবেই সে গত সাড়ে তিন বছর ধরে কলেজটিতে কাজ করে যা বকশিস পেতো তা দিয়েই সংসার চালাতে তার কিছুটা হলেও স্বামীকে সহায়তা করতেন। কিন্তু শিশু কন্যার ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে সেই পথটিও বন্ধ হয়ে গেল।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে শিশুটির মা জানান, শিশু কন্যা ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে কাজ হারিয়েছে। এখন বুঝতেছি গরীবের বিচার চাইতে নেই। এ ঘটনার বিষয়ে খুলনা ইসলামী কলেজের সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা মুখ খোলেননি।
এ বিষয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মমতাজুল হক জানান, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মোঃ মহিবুল্লাহ (৫০) কে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বর্তমানে সে খুলনা জেলা কারাগারে রয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা গেছে, গত ১৮ জুন বিকেলে নগরীর বয়রা ইসলামীয়া কলেজ মাঠে শিশুরা খেলাধুলা করছিল। এ সময় ৭ বছর বয়সের দুইজন শিশু কন্যাকে চকলেট দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কলেজের শিক্ষকদের টিভি দেখা কক্ষে নিয়ে যায় নৈশ প্রহরী মোঃ মহিবুল্লাহ (৫০)। এরপর ওই কক্ষের দরজা বন্ধ করে অবুজ দুই শিশুকে যৌন নিপীড়ন করে। এরপর ওই কলেজের বদলী কর্মচারীর শিশুকে ধর্ষণ করে। কিছুক্ষণ পর তাদেরকে ওই কক্ষ থেকে বের করে দিলে তারা বাইরে এসে অন্য ছেলে মেয়েদের বলে দারোয়ান দাদু আমাদের ব্যথা দিয়েছে। ঘটনাটি শিশুদের অভিভাবকরা জানতে পেরে তাদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করে। শিশু দু’টির ডাক্তারী পরীক্ষায়ও অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ১৯ জুন সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মোঃ মহিবুল্লাহ’র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত মহিবুল্লাহ বয়রা ফারুকীয়া ক্রস রোডের আলী আকবরের ছেলে। মামলায় নৈশ প্রহরী মোঃ মহিবুল্লাহ (৫০) কে গ্রেফতারের পর গত ২০ জুন আদালতে সোপর্দ করা হলে মহানগর হাকিম মোঃ শাহীদুল ইসলাম জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।সূত্র-সময়ের খবর