কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ সব মিলিয়ে বেশ ভালো।
মঞ্চ নাটকে কীভাবে এলেন?
মঞ্চ নাটকের প্রতি আমার ভালোবাসা অনেক আগে থেকেই। গাজীপুরে থাকতেই একটা গ্রুপে ব্যাকস্টেজে কাজ করতাম। ঢাকায় এসে ১৯৯২ তে একটা দলে নাটকের কাজ শুরু করি। ১৯৯৭ সালে থিয়েটার স্কুল থেকে প্রশিক্ষণ শেষে নাট্যচক্রে যোগ দেই। সেই থেকে নাট্যচক্রের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করে যাচ্ছি। আমার অভিনীত উল্লেখযোগ্য মঞ্চ নাটক হলো— ভদ্দরনোক, লেট দেয়ার বি লাইট, চক সার্কেল, পালাকারের নকশা, হোজা নাসিরুদ্দিন, মেরুদ-ের লড়াই, চাঁনমিয়ার বায়োস্কোপ, নীল দর্পণ, দ-ধর, মানিকজোড় ইত্যাদি।
মিডিয়ায় কীভাবে এলেন?
ইন্টারভিউ এবং রীতিমত ওয়ার্কশপ করে একটা প্যাকেজ নাটকের জন্য সিলেক্ট হই ১৯৯৭ এ। ‘শোন হে লখিন্দর’ নামের বিটিভির নাটকটিতে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করি। ১৯৯৯ সালে আমার লেখা মৌলিক একটি নাটক ‘কামিনী ও কেয়া’ প্রচারিত হয় এটিএন বাংলায়। অভিনয় এবং লেখালেখি একসাথে চালিয়ে যাই। ২০০৭ এ সাইফুল ইসলাম মান্নুর পরিচালনায় ইমদাদুল হক মিলনের ‘প্রিয়’ উপন্যাসের নাট্যরূপ দেই। ধারাবাহিকটির নাম ছিল ‘মা বাবা ভাই বোন’। প্রচারিত হয় সেইসময়ের চ্যানেল ওয়ানে। ২০১০-১১ তে পরিচালক মুরাদ পারভেজ আমাকে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় উপন্যাস ‘মানবজমিন’র নাট্যরূপ দেয়ার অফার দেয়। সেসময় ওই নাটকটিই ছিল আমার মূল টার্নিং পয়েন্ট। নাটকটি নিয়ে প্রচুর কাজ করেছিলাম সেই সময়। ১০৪ পর্বের মানবজমিন নাটকটি প্রচারিত হয় এনটিভিতে। এরপর আরও কিছু ধারাবাহিকে কো-রাইটার হিসেবে লেখার কাজ চালিয়ে যাই। অন্ধ তীরন্দাজ, একা এবং কয়েকজন, রেস্টুরেন্ট ২১, রেডিও জকি এবং কতিপয় গল্প তাদের মধ্যে অন্যতম।
বর্তমানে কী নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
বর্তমানে এটিএন বাংলার জন্য একটি দীর্ঘ ধারাবাহিক লিখছি। এটিএন এর চেয়ারম্যান ড: মাহফুজুর রহমান’র উপন্যাস ‘স্মৃতির আল্পনা আঁকি’ অবলম্বনে নাটকটির নাট্যরূপ ও সংলাপ লিখছি আমি। মুরাদ পারভেজের পরিচালনায় ‘স্মৃতির আল্পনা আঁকি’ নাটকটি প্রচারিত হচ্ছে এটিএন বাংলায় প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৯.২০ মিনিটে। শুক্রবার রাত ১০.৫০ মিনিটে নাটকটির শেষ পাঁচ পর্ব একসাথে প্রচারিত হচ্ছে। * আপনার লেখা নাটক কী কী? আমার লেখা উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো ‘কামিনী ও কেয়া’, ‘মা বাবা ভাই বোন’, ‘মানবজমিন’, ‘স্মৃতির আল্পনা আঁকি’। প্রচারের অপেক্ষায় এক ঘণ্টার নাটক কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্প থেকে ‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই’, মোঁপাসার ছোট গল্প থেকে ‘নেকলেস’, আমার মৌলিক নাটক ‘নতুন এসেছেন রুম নম্বর কত’ অন্যতম।
মিডিয়াতে কত বছর যাবত কাজ করছেন?
অভিনয় দিয়ে শুরু করে লেখালেখির হিসেব করলে সময়টা ১৯৯৭। নাটক লেখার পাশাপাশি আমি একজন কথা সাহিত্যিক। ১৯৯২ সালে আমার প্রথম উপন্যাস বের হয়। এ পর্যন্ত ২১ টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। আসছে বইমেলায় আমার একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হবে। ১০০০ পর্বের স্মৃতির আল্পনা আঁকি মেগা ধারাবাহিকের সংলাপ ও নাট্যরূপ দিচ্ছি সাথে।
‘স্মৃতির আল্পনা আঁকি’ ধারাবাহিক নাটক নিয়ে কিছু বলুন?
সময়টা সম্ভবত ২০১৭। এটিএন এর চেয়ারম্যান ড: মাহফুজুর রহমান তাঁর একটি গল্প থেকে আমাকে একটি টেলিফিল্ম লেখার অফার দেন। ‘তবু মনে রেখো’ নামে একটি টেলিফিল্ম লিখে ফেলি। নাটকটি স্যুটিং শুরু হবার আগেই আবার তিনি আমাকে নতুন করে অফার দেন এবং বলেন এটি নিয়ে তিনি ১০০০ পর্বের ধারাবাহিক করতে চান। ইতোমধ্যে তাঁর লেখা উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়ে গেছে। নাটকটি পরিচালনার জন্য অফার দেয়া হয় ন্যাশনাল ফিল্ম এওয়ার্ডপ্রাপ্ত মুরাদ পারভেজকে। সেই থেকে নাটকটি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। মুরাদ পারভেজের সূক্ষ্ম পরিচালনায় আমাদের ‘স্মৃতির আল্পনা আঁকি’ এখন নিয়মিত প্রচারিত হচ্ছে এটিএন বাংলায়। গল্পের কাহিনির প্রেক্ষাপট স্বাধীনতাপূর্ব সময়কাল থেকে বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত বিস্তৃত। হিন্দু মুসলিমের সৌহার্দপূর্ণ সহাবস্থান, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, সংঘাত, হিন্দু মুসলিমের প্রেম ও বিরহ, ব্যক্তিগত জীবনে একজন মানুষের ক্রমউত্থান— সব মিলিয়ে তিন প্রজন্মের গল্প নাটকটিকে একটি ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। নাটকটি দর্শকদের ভালো লাগবে আশা করি।