স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি সবসময় বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও বন্ধু প্রতিম দেশ ভারতকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার করে। তারা একটা পর্যায়ে বলা শুরু করলো আওয়ামী লীগ হলো ভারতের দালাল ও ধর্ম বিরোধী। যারা এসব বলে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান, জাতি গঠনে তার ধর্ম নিরপেক্ষ উদার রাজনীতি। তাদেরকে জানাতে হবে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বন্ধু দেশ ভারত কোটি মানুষের আশ্রয় দিয়েছে, খাবার দিয়েছে ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। এ প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে না পারলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব না। সাতক্ষীরার তালায় তালায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এসব কথা বলেন।
শনিবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় ‘তালা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম’ এঁর আয়োজনে তালা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তালা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম সম্পাদক ও তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলুর সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক মীর জাকির হোসেনের সাঞ্চলনায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের নেতা সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র, আ.হ.ম তারেক উদ্দীন, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সুভাস সরকার, জেলা কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ এনামুল ইসলাম, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি উপাধ্যক্ষ মহিবুল্লাহ মোড়ল, জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা ওবায়দুস সুলতান বাবলু, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডোর সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি লায়লা পারভীন সেজুঁতি, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি বিশ^জিৎ সাধু, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সরদার মশিয়ার রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুরশীদা পারভীন পাঁপড়ী, তালা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন প্রমুখ। গোলটেবিল বৈঠকে মুক্ত আলোচনা করেন জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ।
এসময় আলোচকরা বলেন, চলমান সাম্প্রদায়িক ঘটনাসমূহ পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হচ্ছে। তাই ঐক্যবদ্ধ চেতনাগত উৎকর্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এটা প্রতিরোধ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার এসব ঘটনাসমূহের পিছনে বড় নিয়ামক। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপব্যবহার রোধে সরকারকে আরো উদ্যোগী হতে হবে। ৭২ এর সংবিধান পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সকল সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের নিরসন করতে হবে।
সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনকে ক্রীয়াশীল করার মাধ্যমেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দিতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে শক্তি সমূহকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ রাষ্ট্রের সকল নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। সরকার কোনভাবেই এই দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না। অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজনৈতিক শক্তির সুনির্দিষ্ট ঘোষণা ব্যতীত রাজনৈতিক অপশক্তিকে রুখে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আসুন মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে শানিত করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিসমুহকে এই দেশ থেকে রাজনৈতিকভাবে বিতারিত করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।