ডুমুরিয়া (খুলনা) রমজানে বাজারে সব পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেচাকেনাও বেশি হয়। এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যে ভেজাল ও অনুমোদনহীন পণ্যও চালিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, বাজারগুলোতে পণ্যমূল্যের তালিকা প্রদর্শন ও বিক্রীত পণ্যের ক্যাশমেমো দিতে অনীহা বিক্রেতাদের। ডুমুরিয়া উপজেলায় ১২টি বাজারের অধিকাংশেরই চিত্র এটি।
ডুমুরিয়া বাজার, চুকনগর বাজার, শাহাপুর বাজার, ১৮ মাইল বাজার, খর্নিয়া বাজার টিপনা নতুন বাজার, বাজার শরাফপুর বাজার, বানিয়াখালি বাজার, থুকড়া বাজার, হাসানুর বাজার, আমবিটা বাজার,বাড়াইকাটি বাজার, ধামালিয়া বাজার, রঘুনাথপুর বাজার, মাদার তলা বাজার, শিবনগর বাজারসহ একাধিক বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিক্রেতারা পণ্যমূল্যের তালিকা প্রদর্শনে আগ্রহী নন। ফলে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছেন।
কয়েকটি বাজারে মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা হলেও সেখানে সঠিক মূলা উল্লেখ নেই। রমজানে ভেজাল ও লাইসেন্সবিহীন পণ্য বেচাকেনা ও ভেটেরিনারি পরীক্ষাবিহীন যত্রতত্র পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।
জানা যায়, রোজা শুরুর আগে থেকেই অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফার আশায় নানামুখী প্রতারণা শুরু করে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম নেওয়া। বাজার কমিটির নির্ধারিত মূল্য থাকলেও সেটা প্রদর্শন করে না অসাধু ব্যবসায়ীরা। অনেক সময় প্রদর্শন করলেও ভুল মূল্য তালিকা দিয়ে প্রতারণা করেন। খুলনার ডুমুরিয়া কাঁচা বাজারগুলোর বেশিরভাগ বিক্রেতাই এ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। শুধু ব্যবসায়ীরা নন এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বাজার কমিটির নেতারা। কারণ পণ্যের সঠিক মূল্য তালিকা প্রদর্শন করার বিষয়ে বাজার কমিটি যথাযথ তদারকি করে না।
এদিকে রমজানে দুধ ও মাংসের চাহিদাও বেড়ে যায়। এ সুযোগে দুধে পানি মিশিয়ে বিক্রির অভিযোগও বেড়েছে। নিয়মিত অভিযান না হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারসহ রাস্তার পাশে পানি মিশ্রিত দুধ বিক্রি করছেন। ডুমুরিয়া বাজারে একটি নির্ধারিত কসাইখানা থাকলেও মাংস বিক্রেতারা সেখানে পশু নিচ্ছেন না।
কোনো ধরনের ভেটেরিনারি পরীক্ষা ছাড়াই যত্রতত্র মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। কাঁচাবাজার, দুধ, মাংসের পাশাপাশি দই ও মিষ্টি বিক্রির ক্ষেত্রেও আছে নানা অনিয়ম। লাইসেন্স না থাকা ও বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও মিষ্টি, দই বেচাকেনা বন্ধ হচ্ছে না। ডুমুরিয়ার বাসিন্দা বিশিষ্ট লেখক সাংবাদিক আব্দুল কাদের খান বলেন বাজার তদারকি নেই বললেই চলে। বেশিরভাগ বাজারেই মূল্য তালিকা নেই। এ বিষয়ে প্রশাসন আরও কঠোর হলে ক্রেতারা কিছুটা হলেও প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পাবে।
তিনি আরও বলেন, খুলনার বিএসটিআই, ভোক্তা অধিকারের মতো সংস্থা যদি প্রত্যেক বাজারে সপ্তাহে দু-এক দিন অভিযান চালায় তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমে যাবে। দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোঃ ফারুক খান বলেন, শুধু রমজান নয়, সঠিক মূল্যে পণ্য বিক্রির তদারকি সব সময়ই করা উচিত।
ভেজাল পণ্য যারা বিক্রি করছে তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি। অভিযান : সম্প্রতি ডুমুরিয়া চুকনগর বাজারে অভিযান চালানো হয়। রমজানের পূর্বে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান ডুমুরিয়া বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সচেতন করার সত্ত্বেও কেউ নির্দেশ মানছেন না।