খুলনার মোংলা বন্দরে দ্বিতীয় দফায় মেট্রোরেলের দ্বিতীয় চালানের ছয়টি বগি পৌঁছেছে। জাপান থেকে বগি নিয়ে ‘এমভি ওশান গ্রেস’ নামে জাহাজ রবিবার দুপুরের দিকে মোংলার জেটিতে ভিড়ে। বেলা ৩টার দিকে এসব কোচ খালাস করা শুরু করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
গত ২১ এপ্রিল সকালে জাপানের কোবে সমুদ্রবন্দর থেকে বগিগুলো নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেয় জাহাজটি। এই নিয়ে মোংলা বন্দরে মেট্রোরেলের দুটি চালান পৌঁছুলো।
বিদেশি জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এনসিয়েন্ট স্টিমশিপ কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক মো. ওহিদুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) অধীনে ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প (লাইন-৬) বাস্তবায়িত হচ্ছে। কোচগুলো জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়াম কোম্পানি লিমিটেড তৈরি করছে। বাংলাদেশে এই কোচ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ-০৮-এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবিএম আরিফুর রহমান জানান, মেট্রোরেলের লাইন-৬ কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ-০৮-এর আওতায় ২৪টি যাত্রীবাহী রেল কোচ আমদানি করা হবে। প্রতিটি কোচে ছয়টি বগি থাকবে। এমন একটি প্যাকেজে শুল্কসহ প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। ২০২২ সালের মধ্যে ২৪টি জাহাজে মোট ১৪৪টি বগি মোংলা বন্দর থেকে খালাস হবে।
গত ৩১ মার্চ মোংলায় প্রথম ছয় বগির একটি চালান আসে। পরে সেই বগিগুলো ঢাকায় নির্ধারিত স্থানে রাখা রাখা। গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ সেট ট্রেন তৈরি হয়।
দেখতে কেমন হবে মেট্রোরেলের ট্রেন সেট
মেট্রোরেল ট্রেন সেট জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ রঙে রঙ করা থাকবে। ট্রেন সেটের বডি এবং ভিতরের কাঠামোর সবকিছুই স্টেনলেস স্টিলে তৈরি করা হচ্ছে। কোচে ব্যবহৃত গ্লাসগুলো থাকবে বুলেটপ্রুফ। এই ট্রেনের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় এক শ কিলোমিটার।
ঢাকার যানজট নিরসনসহ নগরবাসীর যাতায়াত আরামদায়ক, দ্রুততর ও নির্বিঘ্ন করতে এই মেট্রোরেল প্রকল্পের মাধ্যমে সব কটি পয়েন্টে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রত্যেকটি ট্রেনে থাকবে ৬টি করে কার বা কামরা। একেকটি কোচে ১ হাজার ৭৩৮ জন যাত্রী যেতে পারবেন। চলাচল শুরু হলে উভয় দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহনে সক্ষমতা থাকবে মেট্রোরেলের।
যাত্রী যাতে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে পারেন সে ব্যবস্থও থাকবে। প্রতিটি কোচের দুদিকে চারটি দরজা থাকবে। ট্রেনে সিটগুলো লম্বালম্বি পাতা থাকবে, প্রতিটি কোচে প্রতিবন্ধী কিংবা বয়ঃবৃদ্ধদের যারা বসতে পারবেন না তাদের জন্য থাকবে দুটি করে হুইলচেয়ার।
প্রতিটি ট্রেনে ৬টি কোচের মধ্যে একটি কোচ শুধুমাত্র নারী যাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হবে। বাকিগুলোতে নারী পুরুষ উভয়ই একসঙ্গে যেতে পারবেন।