মেয়ে টেলিভিশন অভিনেত্রী। অভিজাত পণ্যের মডেল হওয়ার সুবাদে টেলিভিশনে দেখা যায় নিয়মিত মুখ। ছেলেরা প্রতিষ্ঠিত, এমন মা ঘুরছেন পথে পথে। আরো বিস্ময়কর তথ্য হলো- ওই নারীর বাবা সাবেক বিচারপতি। পুরো সিনেমার গল্পের মতো মনে হলেও আসলে একটি ভিডিওতে এটাই বাস্তব হিসেবে উঠে এসেছে।
‘সাহায্যের আবেদন…. আমরা বাঁচতে চাই, আমি পড়াশোনা করতে চাই…. সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন….’ এসব লেখা প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকায় ফুটপাতে ভিক্ষা করছিলেন একজন ষাটোর্ধ্ব নারী। সঙ্গে কিশোরী কন্যা। নানা রোগে আক্রান্ত, কিন্তু কণ্ঠে দারুণ জোর। আর এটা দেখেই স্বপ্ন নামের এক যুবক ভিডিও ধারণ করেন। পরে তিনি তার পেইজে আপলোড করেন ভিডিওটি। হু হু করে ভাইরাল হতে থাকে এই ভিডিও।
আসলে বাইক নিয়ে যাচ্ছিলাম ধানমণ্ডির ওই দিক দিয়ে। আমি তো রাস্তার নানা কিছু ভিডিও করে থাকি। ওই নারীকে দেখে তাই থমকে দাঁড়ালাম। তিনি বিভিন্নজনের কাছে সাহায্য চাইছেন। বলছেন ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত। আমি ওনাকে বললাম যে আপনার একটা ভিডিও করতে চাই। উনি ভিডিও করতে দিলেন; কিন্তু কোনোভাবেই তার পরিবারের সদস্যদের নাম বলতে রাজি নন।
ফেসবুকের ওই ভিডিওতে নারীকে বলতে শোনা গেছে, তার নায়িকা মেয়ের নাম অবনী। তিনি একজন ইয়াবার ডিলারের সঙ্গে থাকেন। তার ছেলের নাম অনিন্দ্য। তিনি চার বছর ধরে পথে পথে ঘুরে ভিক্ষা করছেন। অভিজাত পোশাক ও মার্জিত ভাষায় কথা বলা ওই নারী কিছুতেই তার বাবার নাম বলতে চাননি। তার কাছে বাবার নাম জানতে চাইলে তিনি জবাবে বলেন, ‘প্রশ্নই আসে না। আমার জীবন চলে, আমি সারা জীবন না খেয়ে থাকি, তার পরও ওনার নাম আমার মুখে আসবে না। এতটা অমানুষ, লাইফ সাপোর্ট থেকে আসার পরও ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করে না তুমি কেমন আছ।
কিন্তু আমি ভিক্ষা করেও আমার বাবার জন্য খাবার পাঠাই। কিছুদিন আগেও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে আমি বাবার প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছি আল্লাহর কাছে।’
‘আমার সন্তান- যাকে আমি এই পেটে ধরেছি, সে অনেক সুন্দরী। আমি সুন্দরী না হলেও আমার মেয়ে অনেক সুন্দরী। সে নায়িকা। আমাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে, চুলের মুঠি ধরে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে’- এ কথা বলার সময় কান্না করে দেন ওই নারী।
এদিকে অনেকে ভিডিওর নারীর বক্তব্য ও পরিচয় নিয়ে সন্দেহও প্রকাশ করেছেন। তাদের একাংশের দাবি, ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত হওয়া জরুরি। হতে পারে বিচারপতির সন্তান ও নায়িকা মা পরিচয় দিয়ে তিনিই মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করছেন অর্থ আয়ের নতুন কৌশল হিসেবে। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণও করেছেন তারা।