মোংলা প্রতিনিধি:: সীমানা সংক্রান্ত মামলা জটিলতায় নিধার্রিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি মোংলা পোর্ট পৌরসভার। নির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলদের নিধার্রিত পাঁচ বছরের পরও পেরিয়ে গেছে আরো ৫টি বছর। আর এত দীর্ঘক্ষণ দায়িত্বে থাকার কারণেই পৌরসভা জুড়ে ব্যাপক দৃশ্যমান উন্নয়ন ঘটিয়েছেন বর্তমান মেয়র আলহাজ্ব মো: জুলফিকার আলী। সম্প্রতি আদালতের সেই সীমানা সংক্রান্ত মামলা নিস্পত্তি হওয়ায় পৌরসভার নির্বাচন আসন্ন এমন খবর সর্বত্র আলোচনার ঝড় বইছে। দলীয় মেয়র আর কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে স্থানীয়রা করছেন চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিএনপি নেতা বর্তমান পৌর মেয়র মো: জুলফিকার আলীকে পরাজিত করতে একজন ক্লিন ইমেজের যোগ্য আর প্রবীণ নেতাকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী করতে দাবী তুলছেন আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
মোংলা পোর্ট পৌরসভা সৃষ্টির পর থেকে অধিকাংশ সময়ই পৌরসভার চেয়ারম্যান আর মেয়র পদে নির্বাচিত হয়ে আসছেন বিএনপির সমর্থক প্রার্থীরা। তবে দলীয় মতাদর্শের উর্ধ্বে উঠে মোংলার উন্নয়নে নির্বাচিত মেয়র জুলফিকার আলীকে সকল ধরণের সহযোগীতা করেছেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আঃ খালেক ও স্থানীয় সাংসদ এবং পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনজর থাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে মোংলাসহ দক্ষিণাঞ্চলে। সরকারের ওইসব উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড দলীয় (আওয়ামী) মেয়রের মাধ্যমে হলে আরো বেশি ভালো হতো বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের তৃণমুলের নেতা-কর্মীরা।
পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ দুলাল হাওলাদার বলেন, বর্তমান পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাগেরহাট জেলা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমান মেয়র প্রার্থী হিসেবে একজন যোগ্য ব্যক্তি। বর্তমান পৌর মেয়র জুলফিকার আলীকে নির্বাচনে পরাজিত করতে হলে অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমানের বিকল্প নেই।
পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো: কামরুল ইসলাম বলেন, পৌর নির্বাচনের আভাসে অনেক ব্যক্তি মাঠ গরম করছেন। কিন্তু প্রবীণ নেতা শেখ আঃ রহমান দলীয় মনোনয়ন পেলে সকল নেতা-কর্মীকে একত্রিত করে তিনিই মোংলা পোর্ট পৌরসভা মেয়র পদটি আমাদের উপহার দিতে পারবেন।
পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মোশারফ বলেন, ইতিমধ্যে অনেক নেতার নাম শোনা যাচ্ছে মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য। তাদের মধ্যে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারাদার, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মরহুম শেখ আঃ হাইয়ের সন্তান পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শেখ কামরুজামান জসিম, বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন। তবে পৌরসভার মাঠ পর্যায়ের নেতা-কমর্ীরা বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমানকে দলীয় প্রাথর্ী হিসেবে দেখতে চায়।
পৌর শহরের শেখ আঃ সড়কে ব্যবসায়ী সত্তর বছর বয়সী বৃদ্ধ নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন বসবাস করছি মোংলায়। বাবা মোংলায় থাকতেন চাকুরী করতেন জাহাজে। এজন্য নিজ জন্মস্থান চট্রগ্রাম থেকে এখানে এসে আমরা বসবাস শুরু করি। আমিও এক সময়ে জাহাজে চাকুরী করতাম। এখন আর শরীরে খাটেনা, তাই ছোট ব্যবসা নিয়ে পড়ি থাকি। তবে আমার দেখা মতে বর্তমান মোংলায় অনেক শান্তি আছে। অতীতে আঞ্চলিকতা নিয়ে মারধর চলতো। আমরা অনেক নির্যাতিত হয়েছি। এখন আর হতে চাইনা। তাই সবার কাছে অনুরোধ আঞ্চলিকতার দোহাই দিয়ে কেউ নির্বাচনে সুযোগ নিতে চাইলে তাকে সবাই পরিহার করুন। তবে এই বৃদ্ধ প্রবীণ নেতা হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমান আর উদীয়মান যুবক ক্লিন ইমেজের মানুষ হিসেবে মরহুম শেখ আঃ হাইয়ের সন্তান পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজামান জসিমকে মেয়র পদে যোগ্য মনে করেন।
তবে পৌর নিবার্চনের বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমান বলেন, এখানে আমার ব্যক্তিগত কোন চাওয়া পাওয়া নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আর দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেন খুলনা সিটি মেয়র আমাদের প্রিয় নেতা আলহাজ্ব তালুকদার আঃ খালেক ও মোংলা-রামপালের সংসদ সদস্য উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। তাই নির্বাচন করা বা না করা সবকিছু নির্ভর করবে তাদের মতামতের উপর। আর তাদের নির্দেশ পেলেই কেবল চিন্তা ভাবনা করবো নির্বাচন নিয়ে। তবে তিনি দলীয় নেতা-কমর্ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তাকে ভালবাসার জন্য। একই সাথে তিনি প্রিয় নেতা তালুকদার আব্দুল খালেকের উপর আস্থা রাখার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন।