এম.পলাশ শরীফ:: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের হোগলাপাশায় সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় কার্ড থাকলেও নামের তালিকা থেকে কর্তনকৃত একাধিক ব্যক্তি পাচ্ছেন না ৭ মাস ধরে ১০ টাকার চাল। সুবিধা বঞ্চিতদের অভিযোগ ডিলার নিচ্ছেন তাদের প্রাপ্ত চাল। ইউপি সদস্য বললেন নাম কর্তন করা হয়েছে উপর থেকে।
সোমবার সরেজমিন জানাগেছে, ইউনিয়নের কিচমত জামুয়া গ্রামের ১০ টাকার চাল প্রাপ্ত সুবিধাভোগী দিনমজুর সাখাওয়াত শিকদার (৫২) কার্ড নং ৮৪৮, লুৎফর মীর (৬৫) কার্ড নং ৭৭৪, দুলাল মৃধা (৪৮) কার্ড নং ৮৭৩, বদরুল আমিন (৭০) কার্ড নং ৮৪৮, অরবিন্দু মজুমদার( ৩৮) কার্ড নং ৮০৭ সহ এরকম অনেকেই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকার চালের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর চাল উত্তোলন করেন।
সর্বশেষ গত বছরের মার্চ মাসে এ সুবিধাভোগীরা তাদের চাল উত্তোলন করে পরবর্তী এপ্রিল মাসে চাল আনতে গেলে স্থানীয় ডিলার মো. ডালিম শেখ সুবিধাভোগীদের জানিয়ে দেন তাদের নাম কর্তন হয়েছে।
তাৎক্ষনিক ইউপি সদস্য মো. কবির শেখের কাছে গিয়ে জানতে চাইলে সে সুবিধাভোগীদের জানিয়ে দেন তোমাদের নাম উপর থেকে কেটে দিয়েছে। অথচ সংশোধনী তালিকায় ৭নং ওয়ার্ডের কারোর নামই পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
ইউপি সদস্য কবির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, হতদরিদ্র পরিবারের পরির্বতে ১০ বিঘা জমির মালিকেও দেওয়া হয়েছে ভিজিডি কার্ড। অথচ শুধুমাত্র মাথাগোজার ঠাইটুকু রয়েছে দিনমজুর হতদরিদ্র সমর কৃষ্ণ রায় এ চাল থেকে বঞ্চিত। অনাহারে অর্ধাহারে দিনকাটতে হচ্ছে তার পরিবারের।
অপরদিকে সুবিধা বঞ্চিত মৃত. সুলতান শেখের স্ত্রী হালিমা বেগম (৫৫), উষা রানী মাঝি (৪২), আমির হোসেন শিকদার (৭০), একাধিকরা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মত গরিবের জন্য সহায়তা দিয়ে আসছে। এ নিয়ে জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় ভোটের রাজনীতি করে। মেম্বর ও ডিলারের যোগসাজোসে ভাগে ব্যবসা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ১০ টাকার চালের তালিকা থেকে নাম কিভাবে কর্তৃন হলো বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার জন্য উর্দ্ধতন প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান।
এদিকে ডিলার ডালিম শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে নিয়ম বহির্ভুত পার্শ্ববর্তী রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কুমারখালীতে বসে হোগলাপাশার চাল দিচ্ছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের শত শত সুবিধাভোগীদের।
এ সর্ম্পকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোতোষ কুমার মজুমদার বলেন, ডিলার ডালিম শেখ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে বসে চাল বিতরণ করার বিষয়টি চেয়ারম্যান তাকে অবহিত করেছেন। তালিকা থেকে নাম কর্তনকৃত বিষয়টি তিনি অবহিত নন। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে।
ইউপি সদস্য মো. কবির শেখ বলেন, তিনি ডিলারের সাথে কোন ব্যবসায় জড়িত নন। তালিকা থেকে নাম কর্তন হয়েছে একাধিক সুবিধাভোগ করছেন যারা। তবে ৪টি নাম মৌখিকভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে। পরবর্তীতে পরিষদে সভা করে রেজুলেশনে আনা হবে।
ডিলার ডালিম শেখ বলেন, ১০ টাকার চাল বিতরণে তিনি শুধুমাত্র একজন ডিলার। চেয়ারম্যান সাহেব পরিবর্তন করে যে নামের তালিকা দিয়েছেন তাদেরকেই চাল দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে হোগলাপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল ইসলাম নান্না বলেন, মৃতব্যক্তি ও এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন সেসব সুবিধাভোগীদের নামের ক্ষেত্রে পরিবর্তন করা হয়েছে। তার পরেও যদি স্থানীয়ভাবে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে বিষয়টি তিনি খোজ নিয়ে দেখবেন।