শরীফ মাসুদুল করিম:: বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার বারুইগাতী এলাকার কিশোরী শরিফা খানম গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় তার প্রেমিক কিশোর জাকারিয়ার পিতা দায়ি বলে এলাকায় আলোচনার ঝড় বইছে। ইতিমধ্যে আত্মহত্যার শিকার কিশোরীর অভিভাবকদের নিকট স্বপরিবারে ক্ষমা চাওয়াসহ সামনের দিকে যেন বাড়াবাড়ি না হয় সে জন্য উভয় পক্ষের মাঝে দেনদরবার চলছে বলেও জানা গেছে।
ওই এলাকার একাধিক সূত্র জানায়, বারুইগাতী গ্রামের বাকপ্রতিবন্ধী শহিদুল ইসলাম শেখের মেয়ে শরিফা খাতুন ও একই এলাকার সম্পদশালী নজরুল ইসলাম ওরফে পুলকের ছেলে কিশোর জাকারিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। উক্ত প্রেমের সুত্র ধরে তারা সংসার করার স্বপ্ন দেখে। এদের সম্পর্কের বিষয়টি কোন পরিবারের পক্ষ থেকেই মেনে না নেয়ার এক পর্যায়ে সম্প্রতি প্রেমিকের কথামতো তার বাড়িতে ওঠার জন্য যায় শরিফা। বাড়ির সামনে থেকে শরিফাকে ফিরিয়ে দেয় প্রেমিক জাকারিয়ার পিতা পুলক। এরপর শরিফা বাড়ি ফিরে আসলে বিষয়টি জানার পর নিজ পরিবারের পক্ষ থেকেও তাকে রাগ করা হয়। এরপর মোবাইলে কথোপকথনের মাধ্যমে দু’জনে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং দিন তারিখও ঠিক হয়। বিষয়টি প্রেমিক জাকারিয়ার পিতা জানতে পেরে নিজের ছেলেকে মারপিট করে ঘুমের ঔষধ খাওয়ায়। ঔষধের ক্রিয়ায় জাকারিয়া ঘুমিয়ে থাকায় নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে একত্রে পালানোতো দুরের কথা যোগাযোগও করতে পারে নাই প্রেমিকার সাথে। পক্ষান্তরে প্রেমিকের কোন সাড়া না পাওয়া এবং তার পিতা অপমান করে ফিরিয়ে দেয়ায় ৩১ মে নিজ ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে শরিফা। ভবিষ্যতে যেন এভাবে আর কোন তরতাজা প্রাণ ঝরে না যায় সে জন্য এ ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্থক্ষেপ কামনা করছেন অনেকে।
প্রেমিক জাকারিয়ার পিতা নজরুল ইসলাম পুলক বলেন, তার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের ফোনে কথা হতো। বিষয়টি তিনি জানার পর তার ছেলেকে মারপিট করেছেন এবং ঘুমের ঔষধ খাইয়ে তাকে ঘুমিয়ে (নিয়ন্ত্রণে) রাখছেন। ফলে আত্মহত্যার দিনে ওই মেয়ের সঙ্গে তার ছেলের কোন যোগাযোগ হয় নাই। তাই তার ছেলের কোন দোষ নাই। তথাপিও মেয়েটি আত্মহত্যা করারপর ওই পরিবারের কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন এবং তাদের ভয়ে নিজের ছেলেকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দুরের এক আত্মীয় বাড়িতে রেখেছেন বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে থানার ওসি তদন্ত জগন্নাথ চন্দ্র বলেন, আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে পরবর্তী ব্যাস্থা গ্রহণ করা হবে।