বাগেরহাটের মোল্লাহাটে হেফাজত কর্মীদের হামলায় মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম কবিরসহ ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। হেফাজত নেতা মামুনুল হককে গেপ্তারের প্রতিবাদে হেফাজতকর্মীদের বিক্ষোভ চেষ্টায় বাধা দেয়ায় সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় জনতা, আ’লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হলে পালিয়ে যায় হেফাজত নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যদের মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন, মোল্লাহাট থানার (ওসি) কাজী গোলাম কবির, এসআই ঠাকুর দাস, এএসআই বাহারুল, এএসআই লিয়াকত, কনেষ্টবল সোহাগ মিয়া, নাজমুল ফকির ও ডিএসবির কনেষ্টবল শহিদুল ইসলাম।
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম কবির বলেন, হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে উপজেলার বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষক ও মাদরাসার ছাত্ররা মিছিল নিয়ে হাসপাতাল মোড়ে জড় হতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের জড় হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তারা পুলিশের উপর হামলা করে। এতে আমিসহ আমার ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর শাফিন মাহমুদ বলেন, হেফাজত নেতা মামুনুল হককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে হেফাজতের নেতাকর্মীরা মোল্লাহাট হাসপাতালের মোড়ে জড়ো হয়ে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এসময় হেফাজতের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশ সদস্যদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।
এতে থানার ওসিসহ ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে মোল্লাহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এ হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
তাৎখনিক ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন বাগেরহাট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শীর শাফিন মাহামুদ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুল আলম ছানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাফ্ফারা তাসনীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) ছয়রুদ্দিন আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দ্য মন্ডল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম রেজা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শহিদ মেহফুজ রচা প্রমূখ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শিরা জানায়, হেফাজত নেতা মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে উদয়পুর গ্রামে হেফাজত কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসলে পুলিশ বাঁধা দিলে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ন্যাক্কার জনক ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে জামেয়া হালীমিয়া ও এতিমখানার শিক্ষক (হেফাজত নেতা) হাঃ মাওঃ মোঃ আব্দুল্লাহ’কে অব্যাহতি পত্র প্রদান করা হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুল আলম ছানা স্বাক্ষরিত অব্যাহতি প্রত্র প্রদান করা হয়।
এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুল আলম ছানা স্বাক্ষরিত অপর এক বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম দিন থেকে এ প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী জামেয়া হালীমিয়া ও এতিমখানা সবসময় সরকারের নিয়মনীতি অনুস্মরণ করছে। যে,সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থী বা যারা এ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত তাদের সকলের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ইসলাম শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখে, আর হেফাজত তা ভঙ্গ করে, তাই হেফাজতের এ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, হাঃ মাওঃ মোঃ আব্দুল্লাহ ও চুনখোলা এলাকার সামাদ মুন্সির ছেলে শাকিব মুন্সিসহ প্রায় দেড় শতাধিক হেফাজত নেতা-কর্মী এ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অংশ নেয়।