অনলাইন ডেস্কঃউজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জেলার সাতটি উপজেলার ৫৯টি ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে বন্ধ হয়ে আছে সড়ক ও রেল পথ। এছাড়া যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ১৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যার পানিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের রাস্তাঘাটসহ ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ ডুবে যাওয়াসহ পুকুরের মাছ ভেসে ও মুরগীর খামার, গরুর খামার ডুবে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি পাঁচ সেন্টিমিটার বেড়ে বৃহস্পতিবার সকালে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সড়কগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর ও দুরমুট, মেলান্দহসহ বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব, তারাকান্দি, রেল স্টেশনে পানি ঢুকে পড়ায় ট্রেন চলাচল সাময়িক বন্ধ হয়ে গেছে।
পানি বৃদ্ধির কারণে বন্যা কবলিত এলাকায় ৫৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জামালপুরে নব্বই হাজার দুইশ পরিবারের পাঁচ লাখের অধিক মানুষ বন্যা কবলিত। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুকনো খাবারের তীব্র সঙ্কটসহ শিশু খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে চর্ম রোগ।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত অসহায় মানুষদের জন্য ৭৫০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যেই বন্যা কবলিত মানুষদের মধ্যে দুই হাজার প্যাকেট জাত শুকনো খাবার বণ্টন করা হয়েছে। জেলার ১৪টি মেডিকেল টিম বন্যা দুর্গতদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকায় যুব সমাজের উদ্যোগে রুকরাই এলাকায় নঙ্গর খানা খোলা হয়েছে। এখানে প্রতিদিন এক বেলা করে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।