সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা শুক্রবার , ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
যশোরে করোনায় বিপর্যস্ত পোল্ট্রি শিল্প | চ্যানেল খুলনা

যশোরে করোনায় বিপর্যস্ত পোল্ট্রি শিল্প

নাফি উজ জামান পিয়াল, যশোর প্রতিনিধি :: করোনা ভাইরাসের বিরুপ প্রভাব পড়েছে দেশের সম্ভাবনাময় পোল্ট্রি শিল্পে। পোল্ট্রিতে করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঘটে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় কেউ আর পোল্ট্রি সামগ্রি কিনতে চাচ্ছেন না।
অবস্থাটা এমন পর্যায়ে পৌছিয়েছে যে পোল্ট্রি মুরগির বাচ্চা ফ্রি দিতে চাইলেও কেউ তা নিচ্ছেন না। বিক্রি কমেগেছে পোল্টি মুরগি ও ফিড। এ অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন হ্যাচারি মালিক, খামারী ও ফিড উৎপাদনকারীদের। এখন তাদের প্রতিদিন বিপুল অংকের টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা আশংকা প্রকাশ করেছেন- এ অবস্থা চলতে থাকলে যশোরাঞ্চলে বন্ধ হয়ে যাবে সব হ্যাচারি ও খামার। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন এ শিল্পর সাথে জড়িত ৫ হআজারের অধিক শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, যশোরাঞ্চলে ৫টি হ্যাচারি রয়েছে। এর মধ্যে আফিল হ্যাচারি ও কাজী হ্যাচারি অন্যতম। এসব হ্যাচারিতে প্রতিদিন ৪ লাখ বাচ্চা উৎপন্ন হয়। প্রতিটি বাচ্চা উৎপাদনে খরচ হয় প্রায় ৩২ টাকা করে। কিন্তু দেশে করোনা ভাইরাসের বিস্তার লাভ করার পর থেকে তার নেতিবাচাক প্রভাব পড়েছে এ শিল্পে। বিশেষ করে পোল্ট্রিতে করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঘটে এ ধরণের গুজব রটে যাওয়ায় কেউ আর আগেরমত পোল্টি মুরগি, বাচ্চা এবং ডিম কিনতে চাচ্ছে না। এ অবস্থায় খামারিরাও হ্যাচারি থেকে বাচ্চা কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে বড় ধরনের ধ্বস নেমেছে পোল্ট্রি সেক্টরে।
যশোরের সবচেয়ে বড় বাচ্চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আফিল এগ্রো লিমিটেড এর পরিচালক মাহবুব আলম লাভলু জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পোল্ট্রি শিল্প। তিনি বলেন, আফিল এগ্রো লিমিটেড হ্যাচারিতে প্রতিদিন এক লাখের বেশি বাচ্চা উৎপাদিৎ হয়। একবার বাচ্চা উৎপাদন শুরু করলে ইচ্ছা করলেই তা বন্ধ করা যায়না। কারণ ডিম পাড়ানোর চার মাস আগ থেকে প্রত্যেকটি মুরগীকে প্রস্তুত করা হয়। সেই
মুরগী টানা দেড় বছর ধরে ডিম দিতে থাকে। সেই ডিম থেকেই বাচ্চা ফোটানো হয়। প্রতিদিন বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ২১ দিনের ডিম ইনকিউবেটর মেশিনে রাখতে হয়। এরপর বাচ্চা উৎপাদন শুরু হলে প্রতিদিন একদিন বয়সী বাচ্চা বিক্রি করতে হয়। তাই ইচ্ছা করলেই বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ করা যায়না। কোন হ্যাচারিতে বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ করতে হলে তাদের অন্তত ২১ দিন অপেক্ষো করতে হয়। আবার একবার উৎপাদন বন্ধ করা হলে তা আবা চালু করাও বেশ ব্যয় সাপেক্ষ।
আফিল এগ্রো লিমিটেড এখন এ সমস্যা মোকাবেল করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে হ্যাচারিটি কোটি কোটি টাকার
লোকসানের সম্মুখীন হবে। মাহবুব আলম লাভলু আরো বলেন, গুজবের প্রভাব পড়েছে পোল্ট্রি ফিডেও। যশোরাঞ্চলে ৭/৮ পোল্ট্রি ফিড কোম্পানি রয়েছে। এতে ৭শ থেকে ৮শ টন ফিড উৎপন্ন হয়। কিন্তু চাহিদা কমতে থাকায় সবায় উৎপাদন কমাতে বাধ্য হয়েছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে উৎপাদন কমতে কমতে একদিন ফ্যাক্টরিই বন্ধ করে দিতে হবে। তিনি বলেন, পোল্ট্রি শিল্প বাঁচাতে সরকারি নজরদারি অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। অন্যথায় এ অবস্থা চলতে থাকলে এ শিল্পর মাঝা ভেঙ্গে যাবে।
তামিম মার্কেটিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন এর ব্যবস্থাপক খন্দকার ইদ্রিস হাসান জানান, বয়লার মুরগির একদিন বয়সী একটি বাচ্চা উৎপাদনে ব্যয় হয় কমপক্ষে ৩২ টাকা। কিন্তু এখন তা ১ টাকা দরেও বিক্রি করা যাচ্ছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা, এই দামেও ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেককে ফ্রি দিয়ে দিচ্ছি। কারণ চোখের সামনে বাচ্চাগুলো মারা যাবে, তা দেখা যায়না। এটা অমানবিক। কিন্তু ফ্রি নেয়ার লোকও নেই। তিনি বলেন, শুধু বাচ্চা নয়; লেয়ার মুরগীর ডিম ও ফিডেও গুজবের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ভয়ে কেউ এসব নিতে চাচ্ছেন না। চাহিদা না থাকায় ফিডের বেচাকেনাও কমে গেছে।
তিনি বলেন, যশোরাঞ্চলের এক হাজার খামারে প্রতিদিন প্রায় ১১ লাখ কেজি মাংস উৎপাদিত হয়। ব্রয়লার মুরগীর এক কেজি মাংস উৎপাদনে খরচ হয় প্রায় ১১০ টাকা। কিন্তু এক কেজি মাংশ ৪৫-৫০ টাকা দরেও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। পোল্ট্রি ফিড মিলগুলোরও একই অবস্থা। নেতিবাচক প্রভাবে তারাও এখন ধুকছে।
আফিল এগ্রো লিমিটেড এর টেকনিক্যাল ম্যানেজার ডা. তোফায়েল আহমেদ বলেন, সাধারণ মানুষ যাচাই বাছাই না করেই গুজবে কান দিচ্ছে। তিনি বলেন, পোল্টি মুরগি থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ায় একথা ভিত্তিহীন। বরং পোট্ট্রি মুরগির মাংশ ও ডিম শরীরে শক্তি যোগায়। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে যা গুরুত্বপুর্ণ। যার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি, করোনা ভাইরাস থেকে তিনি তত বেশি নিরাপদ। তিনি বলেন, রেড মিট শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই পোল্টি মুরগির মাংশ বেশি বেশি করে খেতে হবে। কারণ এর মাংশ লাল নয়। তিনি গুজবে কান না দিয়ে সত্য মিথ্যা যাচাই করে আগেরমত সবাইকে পোল্ট্রি মুরগির মাংশ ও ডিম খাওয়ার জন্য আহবান জানান।
এদিকে লোকসান গুনতে গুনতে ছোট ব্যবসায়িরা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা বলছেন, প্রতিটি মুরগিতে তাদের লস হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা করে। এ অবস্থায় যাদের সেডে এক হাজার মুরগি ছিল তাদের ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হয়েছে। বাধ্য হয়ে তারা সেড বন্ধ করে দিচ্ছেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, পোল্টি মুরগি ও ডিম খেলে করোনা রোগের বিস্তার ঘটেনা, এ বিষয়টি সমপর্কে ব্যাপক প্রচার করা প্রয়োজন।
পোল্ট্রি শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতিমধ্যেই তাদের অনেক ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে। এজন্য এখনি প্রযোজন সরকারি নজরদারি ও হস্তক্ষেপ। বিশেষ করে পোল্ট্রি থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ায়না এ বিষয়টি বিভিন্ন ভাবে প্রচার করে জনগনকে তা জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তা হলে হয়তো এ শিল্পটি টিকে থাকতে পারে। অন্যথায় পোল্ট্রি ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়বে।

https://channelkhulna.tv/

যশোর আরও সংবাদ

শার্শায় সাংবাদিকের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহরাব হোসেনের মত বিনিময়

যশোরের শার্শায় অনিয়মের অভিযোগে ৩টি অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা

নো-ম‍্যান্সল‍্যান্ডে অস্থায়ী শহীদ মিনারে দু-বাংলার ভাষাপ্রেমীদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন

দৈনিক যশোর বার্তা’র মিলনমেলা ও বনভোজন অনুষ্ঠিত

বেনাপোলে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে যোগ দিতে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে আসছে ভারতীয় মুসল্লি

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
উপদেষ্টা সম্পাদক: এস এম নুর হাসান জনি
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: শেখ মশিউর রহমান
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২২ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
ঢাকা অফিসঃ ৬৬৪/এ, খিলগাও, ঢাকা-১২১৯।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্তির জন্য আবেদিত।