যশোরে দিন দিন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে মরণব্যাধি করোনাভাইরাস। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শহর থেকে শুরু করে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলছে করোনার ভয়াবহ থাবা। হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন করোনা রোগীর চাপ বাড়ায় রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বাঘারপাড়ার বরবাঘ গ্রামের আব্দুল আজিজ জানান, ৫ জুলাই রাত ১০টা থেকে তিনি মহিলা ইয়োলোজোনের সামনে খোলা আকাশের নিচে টি-টেবিলের উপর স্ত্রীকে নিয়ে বসে আছেন। বিকেল তিনটা পর্যন্ত তার ওয়ার্ডে কোনো যায়গা হয়নি। সারারাত মশার কামড়ে তিনি ও স্ত্রী অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন। রাতে একাধিক বার ওয়ার্ডের সেবিকা ও ওয়ার্ড বয়দের কাছে আকুতি মিনতি করেও কোনো শয্যা পাননি। টানা ১৬ ঘন্টা এ বৃদ্ধ দম্পতি খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসা নিয়েছেন।
চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনরা জানান, অনুমোদিত শয্যার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহ হচ্ছে। অনেক সময় ডাক্তার -নার্স পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের মতে রোগীদের সঠিক চিকিৎসায় আরও বেশি চিকিৎসক-নার্স ওই ওয়ার্ডে দিলে রোগীরা সত্যিকারে উপকৃত হবে।
চলতি মাসের গত ছয়দিনে যশোর জেলায় সরকারি হিসেবে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন একহাজার চারশ’৩২ জন। যার প্রায় ৯৫ ভাগ রোগীই বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের। এ পরিসংখ্যানই স্পষ্ট করছে সারাদেশের মতো যশোরের গ্রামাঞ্চলে করোনার বিস্তার আগ্রাসীভাবেই শুরু হয়েছে। মৃত্যু ও আক্রান্তের হিসেব যেভাবে বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে এখনই সচেতন না হলে হয়তো সামনে ভয়ঙ্কর সময়ের মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে।
এদিকে, যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে আজ ৭ জুলাই যশোরের ৬৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৫৩ জনের নমুনাতে কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে এবং ৩৭৯ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনএফটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. শিরিন নিগার।