যশোর প্রতিনিধি : করোনা-কালীন দুর্যোগে যশোর শহরের শিক্ষার্থী-মেসের ভাড়া ২৫ শতাংশ মওকুফ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আজ শনিবার ৩০ মে যশোর সার্কিট হাউজে প্রশাসনের সঙ্গে মেস-মালিকদের বৈঠকে সর্বসম্মত এই সিদ্ধান্ত হয়। গেল এপ্রিল মাস থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
সার্কিট হাউজ কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান।
এতে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানি, প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের হিসাববিজ্ঞানের শিক্ষক হামিদুল হক ছাড়াও ৬০-৭০ জন মেসমালিক উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে মেস মালিকদের অনেকেই অভিযোগ করেন, গত ৪ মে একই স্থানে এই সংক্রান্ত যে সভা হয়েছিল, সেখানে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা মানবিক কারণে মেসভাড়া ৬০ শতাংশ মওকুফের আহ্বান জানান। সেটা কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। কিন্তু ওই বৈঠকের আলোচনার বিষয়াদি নিয়ে চরম বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। মেসে থাকা শিক্ষার্থী ও তাদের বন্ধু-বান্ধবরা ৬০ শতাংশ ভাড়া মওকুফের দাবিতে মালিকদের ওপর নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
তারা বলেন, মেস-মালিকদের অনেকেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরি করেছেন। তাদের নিয়মিত ব্যাংকের কিস্তি শোধ করতে হয়। মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা ভাড়া না দিলে তারা বিপাকে পড়বেন।
পরে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলেন, আগের বৈঠকে মানবিক বিবেচনায় মেসবাসী শিক্ষার্থীদের ছাড় দেওয়ার আহবান জানানো হয়েছিল। সেটি কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। মেস মালিকদের মানবিক দিকটি বিবেচনায় নেওয়া উচিত। এছাড়া বেশ কিছু মালিক তাদের মেসের শিক্ষার্থীদের ওপর পাল্টা চাপ ও হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বলেও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ আছে।
পরে সভার সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মেসভাড়া ২৫ শতাংশ মওকুফের মানবিক আবেদন করেন। তার এই আবেদন মেনে নেন উপস্থিত মেসমালিকরা। এই সিদ্ধান্ত গেল এপ্রিল মাস থেকে কার্যকর হবে।
সভায় উপস্থিত প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আজকের সভার সিদ্ধান্ত রেজুলেশন আকারে লেখা হচ্ছে। ফলে এটি ‘আবেদন’ নয়, ‘সিদ্ধান্ত’।
এছাড়া সভায় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে মেস মালিক ও মেসের ভাড়াটিয়া বসে সমঝোতা করবেন। এখানে তৃতীয় কোনো পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। ভাড়া দিতে না পারলেও কোনো মেসবাসীর সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা যাবে না।
বৈঠকে উপস্থিত মেসমালিকরা এই আবেদনে সাড়া দেন। তারা জানিয়ে দেন, যদি কোনো শিক্ষার্থী প্রকৃতপক্ষেই মেস ভাড়া দিতে অপারগ হন, তাহলে তাকে আরো বেশি ছাড় দিতে তারা প্রস্তুত।