যশোরের বহুল আলোচিত ৭২ কেজি সাড়ে ৪শ’ গ্রাম সোনা পাচার মামলায় তিন আসামির ফাঁসি ও দুই জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং চারজনের ১৪ বছর করে কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তাজুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন এক ভারতীয় নাগরিক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্টপক্ষের অতিরিক্ত পিপি আসাদুজ্জামান।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, যশোরের শার্শা উপজেলার শিকারপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার তোফাজ্জেল হোসেন তরফদারের ছেলে মহিউদ্দিন তরফদার, জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেরে মুজিবুর রহমান।
এছাড়া, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, শার্শার গোকর্ণ গ্রামের মাঝেরপাড়া গ্রামের আলী হোসেন সরদারের ছেলে মাসুদ রানা, ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার বাগদা থানার গাংগুলিয়া গ্রামের নুর জালাল মন্ডল ওরফে মেছের আলীর ছেলে বর্তমানে যশোরের শার্শার কৃষ্ণপুর গ্রামের শফিকুল মন্ডল মোল্যা ওরফে লিদু।
১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, শার্শার দূর্গাপুর গ্রামের মৃত আবুল মোড়লের ছেলে সফি, আব্দুল মোমিনের ছেলে ইমরান হোসেন, আব্দুল কাদেরের ছেলে রুবেল হোসেন, রামচন্দ্রপুর গ্রামের নওশাদ আলীর ছেলে কবির হোসেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট রাত ১০ টার দিকে কয়েকজন শার্শার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের মাঠের মধ্য দিয়ে ভারতের দিকে যাওয়ার সময় তাদের চ্যালেঞ্জ করেন বিজিবি সদস্যরা। এ সময় মহিউদ্দিনকে আটক করা হয় এবং দু’জন ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায়। আটক মহিউদ্দিনের কাছে থাকা ব্যাগ থেকে ২২৪ পিস সোনার বার ও ফেলে যাওয়া দুটি ব্যাগ থেকে ৪শ’ পিস মোট ৬শ’২৪ পিছ সোনার বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৭২ কেজি সাড়ে ৪শ’৫০ গ্রাম। মূল্য ৩১ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
এ ঘটনায় পরদিন বিজিবির শিকারপুর বিওপির হাবিলদার মুকুল হোসেন বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে চোরাচালান দমন আইনে শার্শা থানায় মামলা করেন।
এ মামলার তদন্তে উঠে আসে অপর ছয়জনের নাম। এ মামলার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা সিআইডি পুলিশের এসআই কোরবান আলী সরকার। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় ঘোষণার দিনে ছয় আসামির উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সাথে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।