স্ত্রী হত্যার দায়ে ১৯ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি জাহিদ হাসানকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় ফুলতলা উপজেলার বড়িয়ারডাঙ্গা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে খানজাহান আলী থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে খানজাহানআলী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) পলাশ কুমার দাসের নেতৃত্বে পথেরবাজার পুলিশ ক্যাম্পের এসআই (নিঃ) কামরুল হুদা নাঈম ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ দীর্ঘ ১৪ ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করে ১৯ বছর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি জাহিদ হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হওয়া অভিযান চলে পরের দিন মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর ) সকাল ১১ টা পর্যন্ত। দীর্ঘ ১৪ ঘন্টা অভিযান শেষে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, নাম ঠিকানা সঠিক না থাকায় জাহিদকে গ্রেপ্তার করতে আমাদের হয়রানি এবং কষ্ট পেতে হয়েছে। স্ত্রী হত্যার দায়ে ১৯ বছর সাজা হওয়ার পর থেকে জাহিদ ছদ্মবেশে বিভিন্ন এলাকায় পলাতক ছিল। জাহিদ হাসান খানজাহান আলী থানার পরিয়ারডাংগা গ্রামের কাওসার মোল্লার ছেলে।
অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ পরিদর্শক পলাশ কুমার দাস জানান, জাহিদ হাসানের জন্ম ১৯৮১ সালে খুলনা জেলার ফুলতলা এলাকায় সে, ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি পান এবং ২০০৪ সালে যশোর জেলার অভয়নগর থানায় বিবাহ করেন। বিবাহ পরবর্তী সময়ে তার স্ত্রীর সাথে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্যের জের ধরে জাহিদ হাসান তার স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য নদীতে ফেলে দেন।
এক পর্যায়ে জাহিদ হাসানের স্ত্রীর মৃতদেহ নদী থেকে উদ্ধার হয় এবং তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে যশোর জেলার অভয়নগর থানায় মামলা করেন।
পরবর্তীতে মামলার তদন্ত ও বিচারিক কার্যক্রম শেষে জাহিদ হাসানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। জাহিদ হাসান ভারতে চার বছর পলাতক থাকেন। বাংলাদেশে ফিরে সে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে থাকে। সর্বশেষ সে পুনরায় খুলনা জেলায় ফিরে এসে ফুলতলা এলাকায় ভিন্ন একটি গ্রামে আত্মগোপন করে থাকে এবং তার নিজের নামসহ পিতা মাতার নাম পরিবর্তন করে শুধুমাত্র হোসেন নাম ধারণ করে। একইসঙ্গে বেশভূষণের কিছুটা পরিবর্তন এনে নিজেকে আড়াল করার উদ্দেশ্যে মুখে দাড়ি রেখে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছুদিন ধরে চাকরি করতে থাকে।