যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে প্রতিদ্বন্দ্বী সম্ভাব্য প্রার্থীদের তুলনায় জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত দেশটির নব-নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে কমলার জনপ্রিয়তা বেশি বলে এক জরিপের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
ব্রিটিশ বই প্রস্তুতকারক সংস্থা ল্যাডব্রোকসের জরিপের ফলে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিসের জনপ্রিয়তা অন্যান্যদের তুলনায় বেশি। ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে ট্রাম্পের ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ২০ শতাংশ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ২২ দশমিক ২ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে।
ল্যাডব্রোকস বলছে, আগামী নির্বাচনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পক্ষে এক ষষ্টাংশ মানুষ নিজেদের মত দিয়েছেন। ওই নির্বাচনে রিপাবলিকান দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে তার সম্ভাবনা রয়েছে এক-তৃতীয়াংশ। তবে এই জরিপে কতসংখ্যক মানুষ অংশ নিয়েছেন সেবিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি ল্যাডব্রোকস।
ব্রিটিশ এই প্রকাশনা সংস্থা বলেছে, রাজনীতিতে ট্রাম্পের সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি। এখনকার মতো পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে পরবর্তী নির্বাচনে কমলা হ্যারিসের সঙ্গে তার ব্যবধান কমে আসবে। ট্রাম্প খুব বেশি পিছিয়ে নেই।
এদিকে, রোববার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের অরল্যান্ডো শহরে আয়োজিত কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে (সিপিএসি) বক্তৃতায় আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে কথা বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
সিপিএসি কনফারেন্সে এক ঘণ্টা ধরে বক্তব্য দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এর বেশিরভাগ সময় ধরেই সর্বশেষ নির্বাচনে কারচুপি ও জালিয়াতির প্রমাণহীন অভিযোগ করেছেন তিনি। ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমাদের খুবই রুগ্ন ও দুর্নীতিগ্রস্ত একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা রয়েছে। এটা অবিলম্বে সমাধান করতে হবে। গত নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছিল।’
কনফারেন্সে বক্তব্য দেওয়ার সময় গত নভেম্বরের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হার মানতে আবারও অস্বীকৃতি জানান ট্রাম্প। এ সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন তিনি এবং একইসঙ্গে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও লড়াইয়ে নামার আভাস দেন।
ক্যাপিটলে সহিংসতায় উসকানির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হয়েছিলেন ট্রাম্প।
২০ জানুয়ারি জো বাইডেনের ক্ষমতাগ্রহণের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে সশস্ত্র হামলা ও সহিংসতা চালান ট্রাম্প সমর্থকরা। এতে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত হয় পাঁচজন। সমর্থকদের চালানো এই হামলায় ট্রাম্প উস্কানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সিপিএসি কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫৫ শতাংশই ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করতে ভোট দেবেন বলে স্ট্র পোলের এক জরিপে উঠে এসেছে। অন্যদিকে মনোনয়ন দৌড়ে ২১ শতাংশ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর রন ডেসান্টিস। তবে প্রার্থীতায় ট্রাম্প না থাকলে মনোনয়ন পাওয়ার দৌঁড়ে ডেসান্টিসের পক্ষে এই ভোটের হার ৪৩ শতাংশ। আর অন্য যেসব সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা এক অংকের ঘরে।