অনলাইন ডেস্কঃ বৃষ্টিতে রাজবাড়ীতে পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ১৪ শতাংশ পেয়াজ রাজবাড়ীতে উৎপাদিত হলেও অতিবৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে জেলার ৫টি উপজেলার নিচু অঞ্চলের আবাদী জমির পেঁয়াজ। ৩ দিনের এই বৃষ্টিতে আবাদী জমির ৭০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। পেঁয়াজের পাশাপাশি মশুরি, রসুন সহ গম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ক্ষতির মুখে পরবে বোরো চাষে। রাজবাড়ীতে এ বছর ২৭ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমির পেঁয়াজের লক্ষমাত্র ধরা হলেও ২৮ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করে জেলার কৃষকেরা।
গত মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে দুর্যোগের সময় যত বেড়েছে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রাজবাড়ীর কৃষকদের ক্ষতির পরিমান। জেলার সদর, বালিয়াকান্দি সহ ৫টি উপজেলার নিচু অঞ্চলের পেঁয়াজ চাষীদের মাথায় হাত। দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনের তৃতীয় জেলা হিসাবে খ্যাত রাজবাড়ীর পেয়াজ চাষীরা বিপর্যস্থ। নিচু অঞ্চলের জমির পানি নিষ্কাশন হয়ে খালে না যাওয়ায় ক্ষতির পরিমান বেশি হয়েছে। মাঠের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত খালে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণের ফলে পানি আটকে থাকায় খালের পানি আসছে কৃষকের আবাদী জমিতে। অন্যদিকে জেলার বেশ কিছু অঞ্চলে কৃষকেরা নিজ ব্যবস্থাপনায় সেলো ইঞ্চিন দিয়ে জমির পানি দূর করছে। অনেক কৃষক মুড়ি পেয়াজ পাকার আগেই পচে যাওয়ার ভয়ে ঘরে তুলছে কৃষকেরা।
জেলার সদর উপজেলার মাশালিয়া অঞ্চলের পেঁয়াজচাষী মোঃ কালাম মন্ডল বলেন, হঠাৎ করে টানা বর্ষনে আমার পৌনে ২ একর জমির প্রায় ১ একর জমি পানির নিচে রয়েছে। তিনি বলেন জমি থেকে খালের দূরত্ব ২০০মিটার হলেও জমির পানি খালে যাচ্ছে না।শামসু মোল্যা বলেন, অল্প কিছু টাকার জন্য সরকার খাল লিজ প্রদান করে। নিজ গ্রহীতারা যেখানে সেখানে বাঁধ নির্মাণ করে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেয় ফলে খালের পানি জমিতে আসে। বালিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের চাষি মোঃ মোতাহার হোসেন বলেন, আমাদের এ মাঠের প্রায় অর্ধেক পেয়াজ পানির নিচে। আমরা ৩দিন ধরে বিভিন্ন জমিতে মাঝখান দিয়ে ক্যানাল করে ২০ টি স্যালো ইঞ্চিন দিয়ে পানি নিষ্কাশন করছি।
বালিয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ বছর পেঁয়াজ চাষীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমি আমার ব্যক্তি উদ্যোগে পানি নিষ্কাশনের জ ন্যযত তেল প্রয়োজন সেটা প্রদান করছি।
ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করে বালিয়াকান্দির উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, হঠাৎ করেই এ বৃষ্টিতে পেঁয়াজের জমি বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে ৪০ শতাংশ ফলন কম হবে বলে জানায় এ কৃষি কর্মকর্তা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান বলেন, বৃষ্টিতে কি পরিমাণ জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেটা জানতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। আমরা কৃষকদের পানি নিষ্কাশন সহ জমিতে যেন ইউরিয়া সার প্রয়োগ না করে সেই পরামর্শ প্রদান করছি।