চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃঅনিয়মের অভিযোগে এলাকাবাসীর তোপের মুখে বন্ধ ডুমুরিয়া-শরাফপুর সড়কে ব্যবহৃত আমা ইট (নিম্নমানের) রাতের আঁধারে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে পুনরায় কাজ চালু করার জন্য ওই ঠিকাদারের পক্ষে একটি চক্র বিভিন্ন দপ্তরে দৌড় ঝাঁপ শুরু করেছেন। ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন সাংবাদিকসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে। এদিকে শতভাগ কাজ বুঝে নিতে এলাকাবাসী সোচ্চার। আর উপজেলা প্রকৌশলী ওই রাস্তায় ব্যবহৃত সকল প্রকার নিম্নমানের খোয়া অপসারণ না করা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার জন্য ঠিকাদারকে লিখিত চিঠি প্রেরন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২ মাস আগে ডুমুরিয়া-শরাফপুর সড়কের কাজ শুরু করেন ঠিকাদার ইকবাল জমাদ্দার। শুরু থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে এই ঠিকাদারের সকল কাজে। নিম্নমানের ইট ব্যবহার করায় এলাকাবাসী গেল ১৫ দিন আগে কাজ বন্ধ করে দেয়। আমা ইট অপসারনের পর পুনরায় কাজ শুরু হয়। গত সোমবার সকালে থানার সামনে হঠাৎ জে বি ব্রিকসের আমা ইট পুনরায় ব্যবহার শুরু হয়। ট্রাক থেকে ইট নামানোর সাথে সাথে শ্রমিকরা তড়িঘড়ি করে ভেঙে খোয়া তৈরি করে রোলার দিয়ে একদিকে সমান করতে থাকে অন্যদিকে পানি মারতে থাকে। এ সময় এলাকাবাসীর বাধার মুখে উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের কার্য্য সহকারী হাবিবুল্লাহ এসে কাজ বন্ধ করে দেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহম্মেদসহ নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে কাজ বন্ধ ও আমা ইট রাস্তার পাশে মজুত রাখার নির্দেশ দেন।
এদিকে গত সোমবার রাতের আঁধারে সকল আমা ইট অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে রাস্তায় দেয়া আমা ইটের খোয়া এখনও অপসারণ করা হয়নি। এ ব্যাপারে ঠিকাদারের ম্যানেজার জিয়াদ আলী সরদার এ প্রতিবেদককে বলেন, বদনামের ভয়ে আমা ইট অপসারণ করা হয়েছে। তবে কার নির্দেশে রাতে এ কাজ করেছেন তার কোন সদুত্তর দেননি তিনি। তবে পুনরায় কাজ চালু করার জন্য ওই ঠিকাদারের পক্ষে ২/৩ ব্যক্তি বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, ৮ কোটি ৮০ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৫ টাকা ৮৪ পয়সায় সড়কটি নির্মানে সাতক্ষীরার আজাদ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ইকবাল জমাদ্দার নামে ঠিকাদারের সাথে চুক্তিবন্ধ এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের ৪ মার্চে কাজ শুরু এবং ৩ আগষ্ট কাজ শেষ করার কথা। তবে এখনও এক-তৃতীয়াংশ কাজ শেষ হয়নি। তিনি বলেন, শুরু থেকেই তার কাজে ব্যপক অনিয়ম হচ্ছে। মৌখিকভাবে সর্তক করলেও সংশোধন না হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার লিখিত চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে আমা খোয়া অপসারণ না করা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এলজিইডি’র বিভাগীয় প্রকৌশলী এ এস কবির বলেন, ডুমুরিয়া-শরাফপুর রোডের অনিয়মের কোন অভিযোগ এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।