বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ৪ নং রামপাল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দীন হাওলাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন ইউপির নারী সদস্যসহ নয় ইউপি সদস্য। একইসঙ্গে তারা চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করে রামপাল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেছেন। রবিবার(১৮ জুলাই) দুপুরে সাড়ে ১২ টায় ইউপি সদস্যরা রামপাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার রহিমা সুলতানা বুশরা’র দপ্তরে অনাস্থাপত্র জমা দিয়েছেন।
অনাস্থা প্রস্তাবে সাক্ষর করেছেন ইউপি সদস্য দিপ্তী রাণী হালদার, রোজিনা বেগম, মোঃ গিয়াস উদ্দিন, মনোজিৎ কুমার মুখার্জী, শেখ মোঃ সাইফুল্লাহ, উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল, আঃ ছালাম শেখ, মোঃ মিকাইল হোসেন ও মোঃ আলমগীর ফকির।
লিখিত অনাস্থাপত্রে তারা উল্লেখ করেন; ”চেয়ারম্যান ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য উজ্জল মজুমদারের অজান্তে এ, ডি, বি এর বরাদ্দকৃত অর্থ দ্বারা বিদ্যালয়ের খেলাধুলার সরঞ্জামাদী কেনার প্রকল্পের সভাপতি করে গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমান দ্বারা বিভিন্ন স্কুলের ভূয়া প্রত্যয়নপত্র দিয়া এ.ডি.বি এর অর্থ আত্মসাৎ করার চেষ্টা করেন। বিগত বছরগুলোতে পরিষদের সকল কর্মকান্ড হইতে ইউপি সদস্যদের বিরত রেখেছেন। বাজেট পরিচালনার জন্য ইউপি সদস্য দ্বারা ওয়ার্ড সভা হয় নাই। ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক মিটিং হয় না। চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমান দ্বারা পরিষদ পরিচালনা করেন। চেয়ারম্যান বাজেট সম্পর্কিত কোন তথ্য ইউপি সদস্যদের জানান না। ইউনিয়নের প্রজেক্ট গুলো ইউপি সদস্যদের অজান্তে নাম দিয়ে গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমান দ্বারা পরিচালনা করেন। ইউনিয়ন পরিষদের সকল প্রকল্প/প্রজেক্ট চেয়ারম্যান, পরিষদের সচিব গৌতম বসু ও গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমান দ্বারা পরিচালিত হয়। বরাদ্দকৃত সেলাই মেশিন, বাই সাইকেল, স্কুল ব্যাগ সহ অন্যান্য জিনিসপত্র চেয়ারম্যান গরীব, দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ না করে নিজ আত্মীয়দের মাঝে বিতরণ করেন। এল, জি,এস,পি এর বরাদ্দকৃত অর্থ দ্বারা রাস্তাসহ অন্যান্য প্রকল্প চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের দৃষ্টিগোচরের বাইরে গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমানের মাধ্যমে পরিচালনা জন্মনিবন্ধন, মৃত্যু নিবন্ধন, ওয়ারেশ কায়েম, প্রত্যয়নপত্রসহ সকল কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বে-হিসাবী টাকা নেওয়া হয় । সে অর্থ চেয়ারম্যান, পরিষদের সচিব গৌতম বসু, গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমান ও তথ্য পরিচালক রবিউল ইসলাম ভাগ বাটোয়ারা করিয়া অর্থ আত্মসাৎ করেন। চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমান দ্বারা পরিষদের গাছ কর্তন ও পুরোনো আসবাবপত্র বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমান ইউনিয়ন পরিষদকে মাদকদ্রব্য ও নারী সংঘটিত কাজে ব্যবহার করেন। গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমান ডিউটি চলাকালিন সময়ে কখনো পোষাক পরিধান করেন না। উপজেলা থেকে প্রাপ্ত টিউবওয়েল গুলো মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যান, সচিব গৌতম বসু ও গ্রাম পলিশ হাছিবর রহমান দ্বারা বিক্রি করে থাকেন। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য/সদস্যাগণ নিয়া বারবার চেয়ারম্যানকে জানানো স্বত্ত্বেও তিনি এই বিষয়গুলোকে কোনরূপ গুরুত্ব দেন নাই। এছাড়াও শপথ গ্রহনের পর হইতে ৩৩ (তেত্রিশ) মাস চেয়ারম্যানকে বারবার জানানো স্বত্বেও সরকার প্রদত্ত ইউপি সদস্যদের অংশের প্রতি মাসের সম্মানী ভাতা ৪,৪০০/- টাকা করে প্রদান করেন নাই।’’
“এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নাসির উদ্দীনের সাথে তার ব্যবহৃত (০১৭৩৪-৩২৮৮৩২) নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।”
“এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রহিমা সুলতানা বুশরা’র সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, এ অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”