বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক কর্মকর্তাকে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক নারীসহ ৭ প্রতারক কে আটক করেছে রামপাল থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) গভীর রাতে উপজেলার শ্রীফলতলা নামক স্থানে অভিযান চালিয়ে এদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও নগদ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলো, উপজেলার মো. শাহীন শেখ(২২), সুরাইয়া আক্তার টিনা (১৮), মো. রমজান শেখ (১৭), মো. আব্দুল্লাহ শেখ (২০), আসলাম মোল্লা আকাশ (২০), ইমন শেখ (১৭),ফেরদৌস হাসান জয় (১৭),ও সিয়াম (১৮)। মামলা দায়ের পূর্বক বুধবার বিকেলে আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, প্রতারক শাহীন শেখ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কথিত প্রেমিকা টিনাকে সাথে নিয়ে একটি প্রতারক চক্র গড়ে তোলে। তারা ওই নারী সদস্যকে দিয়ে বিভিন্ন লোককে প্রেমের ফাঁদে ফেলতো। এক পর্যায়ে তারা রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজ করা পাওয়ার মেক লিমিটেড কোম্পানির ম্যানেজার আদিল মাহামুদকে ফাঁদে ফেলে। গত ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দেয়। ওই সময় তাকে খুলনা মোংলা মহাসড়কের ভেকটমারী বেলাই ব্রীজের কাছে আসতে বলে।
আদিল মাহামুদ সেখানে গেলে তাকে বেঁধে মাহিন্দ্রা গাড়িতে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এরপর তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়ে মারপিট করে। এক পর্যায়ে তার কাছে থাকে নগদ টাকা, মোটরসাইকেল, এটিএম কার্ড ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা আদিলের বাড়িতে ফোন করিয়ে কয়েক দফায় বিকাশ ও রকেট এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রায় ৮০ হাজার টাকার মত হাতিয়ে নেয়। এদিন গভীর রাতে তাকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ছেড়ে দিয়ে আরও ৬ লক্ষ টাকা দাবী করে। পরাবর্তিতে গত ১৬ জানুয়ারী সকাল ৮ টায় আদিল মাহামুদ ফয়লা গিয়ে মাহিন্দ্রা চালককে চিনতে পেরে তার মাধ্যমে আসামীদের সনাক্ত করেন।
রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোমেন দাস বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে আটক প্রতারক চক্র বিভিন্নভাবে ফেসবুকের মাধ্যমে টার্গেট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সহজ সরল মানুষদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল।
আদিল মাহামুদের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতারক চক্রের ৮ আটক করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। এছাড়া এই চক্রের ৩-৪ জন পলাতক রয়েছে। তাদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ছিনতাইকৃত মটর সাইকেলটি আ. রশিদ এর পুত্র শেরখানের বাড়ী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। যাদের বাড়ি থেকে মটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের কেউ কেন মামলায় আসামি বা আটক হয়নি, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে রামপাল-মো়ংলার সার্কেল এ.এস.পি.মুসফিকুর রহমান তুষার বলেন, প্রাথমিক তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ছিনতাই করে আনা মটর সাইকেল যাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ বা আটক না করায় এলাকা নানা মুখী গুজ্ঞনের সৃষ্টি হয়েছে।