চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃচলতি অর্থবছরে সরকারি ৬ ব্যাংককে ৩ হাজার ১০৭ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। গত অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। কিন্তু ব্যাংকগুলোর ব্যর্থতার কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবারের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে ২ হাজার ৭০৫ কোটি এবং অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণ থেকে ৪০২ কোটি টাকা আদায় করতে হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ব্যাংকগুলোর সঙ্গে পৃথকভাবে সম্পাদিত ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’র আওতায় এই পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।
জানা গেছে, বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল। দুয়েকটি ব্যাংক ছাড়া অন্য ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ ‘চলতি মানের নিচে’ বা সন্তোষজনক নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সোনালী ব্যাংককে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা (শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে ১০০০ কোটি ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ২০০ কোটি টাকা) খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। গত অর্থবছরে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি আদায় করেছে ৭১০ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংককে ৮৫০ কোটি টাকা (শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে ৮০০ কোটি ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ৫০ কোটি টাকা) খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। গত অর্থবছরে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি আদায় করেছে ৫৯৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে আদায় করেছে মাত্র ২৭ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে অগ্রণী ব্যাংককে ৪৮০ কোটি টাকা (শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে ৪০০ কোটি ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ৮০ কোটি টাকা) খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। গত অর্থবছরে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৫০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি আদায় করেছে ৩০৯ কোটি টাকা। একই সময়ে রূপালী ব্যাংককে ২৮৫ কোটি টাকা (শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে ২৫০ কোটি ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ৩৫ কোটি টাকা) খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। গত অর্থবছরে ব্যাংকটির মোট খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। ব্যাংকটি আদায় করেছে ১৭১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
চলতি অর্থবছরে বেসিক ব্যাংককে ১৫৭ কোটি টাকা (শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে ১৫৫ কোটি ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ২ কোটি টাকা) আদায় করতে হবে। গত অর্থবছরে ব্যাংকটির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি আদায় করতে পেরেছে ১৩৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
চলতি অর্থবছরে বিডিবিএল ব্যাংককে ১৩৫ কোটি টাকা (শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে ১০০ কোটি ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ৩৫ কোটি টাকা) খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। গত অর্থবছরে ব্যাংকটির আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি আদায় করেছে ৯৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
প্রসঙ্গত, গত অর্থবছরে ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৮০ কোটি এবং অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণ থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৫৫ কোটি টাকা। কিন্তু ব্যাংকগুলো আদায় করেছে ১ হাজার ৮৩৮ কোটি ও প্রায় ১৭৮ কোটি টাকা।