চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত দেশের জনপদে সংক্রমন এড়াতে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। সরকারের সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারণী মহল ইতোমধ্যে জারী করেছে কতিপয় নির্দেশনা। আর এসকল নির্দেশনা বাস্তবায়নে মহানগরী, জেলা ও উপজেলা তথা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন। দেশের অন্যান্য স্থানের মত যখন এক অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে, তখন ধ্রুবজ্যোতি হয়ে কর্তব্যনিষ্ঠা দিয়ে নিজেকে মেলে ধরেছেন খুলনা জেলার রূপসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন আক্তার।
অসীম সাহসিকতা ও অদম্য মনোবলে দৃঢ়তার সাথে সকাল থেকে রাত অবধি ছুঁটে চলেছেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। সেইসাথে ন্যায়-নিষ্ঠা ও সততার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আতঙ্কিত মানুষকে সচেতন করা, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা, বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অসহায়-দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন প্রতি মূহুর্তে। তাঁর এসকল কর্মযজ্ঞের কারণে গোটা রূপসা উপজেলাতে মানবতাবাদের এক জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ জনমনে নন্দিত হয়েছে এ কর্মকর্তা। প্রশাসনিক দক্ষতা, সহনশীল মানবিকতা আর সদাহাস্য আচরণ তার কর্মগুণকে প্রশংসিত করেছে রূপসার জনপদে।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে তিনি উপজেলার জনগণকে সচেতন ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছুটে চলেছেন এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। আইনের কোন ব্যত্যয় ঘটলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে আইন অমান্যকারীকে দিচ্ছেন সাজা। ইতোমধ্যে যা দৃশ্যমান হয়েছে এ উপজেলাতে। করোনা ভাইরাসকে পূঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা যখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করেছে, তখন বাজার নজরদারি করে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীকে করেছেন জরিমানা। পাশাপাশি দিয়েছেন কঠোর নির্দেশনা।
এদিকে করেনা ভাইরাসের সংক্রমন এড়াতে নিত্য আয়ের মানুষেরা কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে অফিসার্স ক্লাবের মাধ্যমে তিনি শুরু করেছেন তহবিল গঠনের কাজ। যেখানে তিনি নিজেই ব্যক্তিগত অর্থ প্রদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেন। সরকারের সহায়তা হিসেবে প্রাথমিকভাবে ২০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পেয়েছেন অসহায় মানুষের খাদ্য সহায়তা হিসেবে। উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে তিনি আরো দেড় লাখ টাকা জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অসহায় মানুষদের চিহ্নিত করে তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন অবলীলায়। অত্যন্ত স্বাবলীলভাবে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষদের তালিকা করে ব্যক্তিগতভাবে দিয়েছেন মাক্সসহ নানা উপকরণ। অন্যদিকে মরণব্যাধী অদৃশ্য এ ঘাতকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরীতে মাঠ পর্যায়ে প্রচারণাসহ তাঁর অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজে দিয়েছেন বিভিন্ন পরামর্শ।
তিনি বলেন, এ যুদ্ধটা আমাদের সকলের। এভাবে চোর পুলিশ খেলে আমরা ভালো ফল আশা করতে পারি না। তাই বাইরে নয়, ঘরে অবস্থান করুন। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কয়টা দিন কষ্ট করে নিজের, পরিবার এবং দেশের স্বার্থে মানবিকতার স্বার্থে নিজ ঘরে অবস্থান করুন। তিনি বলেন, পরম করুণাময়ের ইচ্ছায় আমরা খুব শীঘ্রই ভীতিমুক্ত এক নতুন সকালের দেখা পাবো।