লক্ষ লক্ষ মুসল্লির কান্নার ধ্বনির মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্বের তৃতীয় ঐতিহাসিক চরমোনাই মাদরাসা ময়দানে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী অগ্রহায়ণ মাহফিল।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় সমাপনী অধিবেশন ও আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় লাখ লাখ মুসল্লিদের আধ্যাত্মিক এ মিলনমেলা।
এর আগে শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বাদ জুমা আমিরুল মুজাহিদীন আলহাজ হজরত মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাইর উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে মাহফিল শুরু হয়।
সমাপনী অধিবেশনের বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, মানুষ আজ আল্লাহকে ভুলে নাফরমানি করছে অহরহ।
অথচ একজন মানুষ কবরে গিয়ে মাফ না পাওয়া পর্যন্ত নিজেকে নিকৃষ্ট পশুরমত মনে করতে হবে। সুতরাং তাক্বওয়া বা আল্লাহর ভয় অর্জনের মাধ্যমে মহান রবের সন্তুষ্টি নিয়ে কবরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।
আল্লাহর ভয় যার অন্তরে নেই এই আলেম, মুফতি ও পীরের কোন মূল্য নেই।
সমাপনী অধিবেশনের বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই মাহফিল বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত সবার প্রতি ধন্যবাদ জানান।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়া প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা, সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মোবারকবাদ জানান পীর সাহেব চরমোনাই।
আখেরি মোনাজাতে পীর সাহেব চরমোনাই ভারত, কাশ্মীর, মিয়ানমার, ফিলিস্তিন, সিরিয়াসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের নিরাপত্তা ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করেন।
চরমোনাই মাহফিলের অস্থায়ী হাসপাতালে চরমোনাই মাহফিলে আগত মুসল্লিদের মধ্য থেকে গত শুক্রবার বাকেরগঞ্জের মো. আবু হানিফ হাওলাদার (৬৯), মাদারীপুরের মামুন (৪৭), শনিবার চাঁদপুরের তাজুল ইসলাম গাজী (৬২) এবং রোববার পিরোজপুরের কাশেম আলী (৭৫) ইন্তেকাল করেন। তাদের মরদেহ জানাজা শেষে নিজ নিজ এলাকায় পাঠানো হয়।
এছাড়াও মাহফিলে দুইজন বিধর্মী মুসলমান হয় এবং একাধিক বিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ।
চরমোনাই মাহফিলের দ্বিতীয় দিন ফজর ও মাগরিব বয়ান করেন নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমসহ দেশ-বিদেশে বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরামগণ।
চরমোনাই মাহফিলে প্রথমদিন কুরআন শিক্ষা বোর্ডের প্রশিক্ষণ কর্মশালা, দ্বিতীয়দিন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত ওলামা সম্মেলন, যুব আন্দোলনের যুব সমাবেশ এবং তৃতীয় দিন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়।