চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই নাসিম এবং পরিদর্শক কামরুল ইসলামকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে। ক্যাসিনো কারবারে যুক্ত ১৯ নেপালিকে পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে রমনা থানার কনস্টেবল দীপঙ্কর চাকমা ও ডিএমপির প্ররক্ষা বিভাগের এএসআই গোলাম হোসেন মিঠুকে।
এ ছাড়া ঢাকার ৫০ থানার ওসির আমলনামা নিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। এর মধ্যে যেসব ওসি ক্যাসিনো কারবারে জড়িত এবং যারা বছরের পর বছর ধরে ঢাকার এক থানা থেকে আরেক থানায় দায়িত্ব পালন করছেন তাদের কয়েকজনকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার ৫০ থানার ওসির মধ্যে অন্তত ১৩ জনের বিষয়ে নেতিবাচক তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের ডিএমপির বাইরে বদলি, ওসির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়াসহ অন্যান্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। বেশ কয়েকজন ওসির বিরুদ্ধে ক্যাসিনো বাণিজ্যের টাকার ভাগ নেওয়ার তথ্য পেয়েছে ডিএমপি সদর দপ্তর। এ ছাড়া কয়েকজন ওসির বিরুদ্ধে সেবাপ্রত্যাশী মানুষকে হয়রানিসহ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে। পর্যায়ক্রমের তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে পুলিশ কমিশনারের দপ্তর। ইতোমধ্যে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্যাসিনোর টাকা নেওয়ার তথ্য পেয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। অন্যান্য সোর্স থেকেও এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশ কমিশনার গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কঠোর বার্তা দিয়ে বলেছেন, গোয়েন্দা পুলিশের কোনো সদস্য ঘুষ-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে বলেছেন।
গত ২০ আগস্ট পুলিশ কমিশনার ডিএমপির ওসি থেকে শুরু করে বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, যেসব ওসির এলাকায় ক্যাসিনো বা অন্যান্য জুয়ার সামগ্রী মিলবে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো পুলিশ সদস্য মাদকের সঙ্গে যুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থার কথাও বলেন তিনি।
জানা গেছে, মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ঢাকার পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদানের পরই ঢাকার ৫০ থানার ওসির আমলনামা নেওয়া শুরু করেন। ডিএমপির কোন কোন থানার ওসি বছরের পর বছর ধরে এক থানা থেকে আরেক থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, যাদের আমলনামা খারাপ পাওয়া গেছে তাদের ওসির পদ থেকে সরিয়ে দক্ষ ও চৌকস পরিদর্শকদের ওসি হিসেবে পদায়নের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। এ ছাড়া যেসব এসি, এডিসি ও ডিসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার তথ্য মিলবে তাদেরও সরিয়ে দেওয়া হবে ডিএমপি থেকে।সুত্র-দৈনিক আমাদের সময়